husband wife golpo শেষের পাতায় শুরু - 17 by Pinuram - Malayalam sex stories

husband wife golpo শেষের পাতায় শুরু - 17 by Pinuram

sexstories

Administrator
Staff member
bangla husband wife golpo choti. অভ্যেস বশত জামা কাপড় খুলে খালি গায়ে কোমরে তোয়ালে জড়িয়ে বাথরুমে ঢুকে পরে রিশু। গ্রীষ্ম বর্ষা শীত, হসপিটাল থেকে ফেরার পরে সে রাত হোক কি দিন, স্নান করে তবেই বাকি কাজ করে। সারাদিন রোগীদের নিয়ে কাটায়, কত অপারেশান থাকে তাই বাড়ি ফিরে স্নান না সারলে ভীষণ অস্বস্তি বোধ হয় ওর। স্নান করতে করতে ভাবে, মা ওকে বলেছিল এক পা যদি ও এগোয় তাহলে ঝিনুক ও এক পা ওর দিকে বাড়িয়ে দেবে। ঝিনুকের কি পছন্দ কি অপছন্দ কিছুই জানা নেই, সেই এক পা কি ভাবে বাড়াবে সেটা ভেবে পায় না।

ভাবতে ভাবতে মনে মনে হেসে ফেলে রিশু, ভীষণ দুষ্টু মেয়েটা, গত রাতে অজান্তেই ঝিনুকের বড় সুটকেসের দিকে ওর নজর চলে গিয়েছিল, বেশ কিছু ফিনফিনে লঞ্জারি দেখে হাসি পেয়ে গেছিল ওর, মেয়েটা বেশ কামুকী আর বিলাসী স্বভাবের। প্যান্টি গুলো অনেক ছোট ছোট আর স্বচ্ছ পড়া না পড়া এক ব্যাপার। জামা কাপড়ের মধ্যে এক বাক্স উঁকি মারছিল কিছু একটা রাখা ছিল যেটা ঠিক ভাবে চোখে পরেনি তবে এইটুকু বুঝে গিয়েছিল যে যন্ত্রটা সাধারন ব্যাবহারের জন্য নয়।

husband wife golpo

কলেজের শুরুর দিকে ল্যাপটপে বসে যে নগ্ন মেয়েদের ছবি দেখেনি সেটা নয়, উঠতি বয়সের সাথে সাথে যেটা সব ছেলেদের মধ্যে আসে সেটা রিশুর মধ্যেও ছিল। ওই রকম লাস্যময়ী কামুকী পোশাকে মেয়েদের ছবি বহুবার দেখেছে তবে চাক্ষুস কাউকে এইভাবে দেখার সুযোগ হয়নি। হ্যাঁ একবার চন্দ্রিকা ওর বাড়িতে এসেছিল, তখন স্নান সেরে শুধু মাত্র একটা তোয়ালে জড়িয়ে বাথরুম থেকে বেড়িয়ে ঘরের মধ্যে গিয়ে পোশাক বদলের সময়ে চন্দ্রিকাকে নগ্ন অবস্থায় দেখেছিল।

যেহেতু সে ডাক্তার তাই প্রচুর নারী দেহ দেখেছে কিন্তু সেইভাবে কোন নারীর দিকে চোখ তুলে তাকায়নি কোনদিন। বসার ঘরের সোফায় বসে আড় চোখে চন্দ্রিকার তীব্র যৌন আবেদনে মাখামাখি দেহবল্লরীর সুধা আকন্ঠ পান করে মত্ত হয়ে গিয়েছিল সেদিন। মানস চক্ষে সদ্য বিবাহিতা তন্বী তরুণী ঝিনুকের সেই লাস্যময়ী ফিনফিনে লঞ্জারিতে আঁকতে চেষ্টা করে রিশু।

স্নান সেরে কোমরে তোয়ালে জড়িয়ে অন্য একটা তোয়ালে দিয়ে মাথা মুছতে মুছতে বেড়িয়ে আসে বাথরুম থেকে। বসার ঘর ফাঁকা দেখে একটু আশ্চর্য হয়ে যায়, আবার কি ঘুমিয়ে পরল নাকি ঝিনুক? শোয়ার ঘরের মধ্যে উঁকি মেরে দেখে যে একটা শাল গায় দিয়ে মেয়েটা বিছানায় চুপচাপ কুঁকড়ে মাথা নিচু করে বসে আছে। হটাত কি হল আবার? গলা খ্যাঁকরে নিজের অস্ত্বিতের জানান দিতেই অশ্রু প্লাবিত নয়ন মেলে দরজার দিকে তাকায় ঝিনুক। husband wife golpo

নরম গলায় রিশু ঝিনুককে জিজ্ঞেস করে, "এই কি হয়েছে?"

মুখ ঝামটা দিয়ে ওঠে ঝিনুক, মরন দশা আমার কেন মরতে বিয়ে করেছিল যখন আমার চোখের জলের ভাষা বুঝতে পারো না? সারাদিন একলা ছিলাম এক বারের জন্য খোঁজ নিয়েছ, বাড়িতে একটা কুকুর থাকলেও মানুষ যখন বাড়ি ফেরে তখন অন্তত সেই কুকুরটার সাথে একটু খেলা করে, তুমি ত আমাকে অস্পৃশ্যের মতন পাশ কাটিয়ে চলে গেলে।

বুকের ভেতরে এত কিছু এক নিঃশ্বাসে আওড়ে গেল ঝিনুক, মুখ থেকে শুধু একটা কথা বের হল, "না এমনি ভালো লাগছে না তাই।"

দরজার ভেতরে এক পা বাড়িয়ে বিছানার কাছে এসে বলে, "এই ভাবে একা একা এখানে বসে থাকলে কি ভালো লাগবে? ওই ঘরে বসে টিভি দেখতে পারো ত।"

সারাদিন টিভি গিলে কি হবে? বাধ্য মেয়ের মতন চোখ মুছে বিছানায় উঠে বসে বলে, "আচ্ছা।"

মাথা মুছতে মুছতে রিশু ওকে বলে, "ওয়াইফাই আছে, বাড়িতে ভিডিও কল কর তাহলে খারাপ লাগবে না।"

বিছানায় ছেড়ে উঠে দাঁড়ায় ঝিনুক, এইভাবে ওর সামনে খালি গায়ে শুধু একটা তোয়ালে জড়িয়ে দাঁড়াতে লজ্জা করছে না রিশুর? ভেতর ভেতর খুব হাসি পাচ্ছিল সেই সাথে লজ্জাও, বলিষ্ঠ চেহারার মানুষটার দিকে তাকাতে লজ্জা পায় তাই ওর পায়ের দিকে তাকিয়ে নিচু কন্ঠে জিজ্ঞেস করে, "খাবার গরম করে দেব?" husband wife golpo

আলমারি খুলে একটা নিজের জামা কাপড় বের করে উত্তর দেয়, "না থাক আমি করে নেব।" জামা পড়তে পড়তে ওকে বলে, "বিকেলে বাজারে যাবো, কিছু আনার থাকলে বল।"

মাথা দোলায় ঝিনুক, অনেক কিছু কেনার আছে ওর, জিজ্ঞেস করে রিশুকে, "এখানে এটিএম কোথায় আছে?"

বারমুডা পড়তে পড়তে ওকে বলে, "এই পাশেই একটা মারকেট আছে সেখানে আছে।"

জামা কাপড় পরে রান্নাঘরে ঢুকে পরে রিশু। ভাত ডাল রাজমা রান্না করে রেখে গিয়েছিল কাজের মেয়ে। গ্যাস জ্বালিয়ে খাবার গরম করার সময়ে ভাবে, বিকেলে বাজারে গিয়ে কিছু কাঁচা সব্জি নিয়ে আসা দরকার না হলে আগামিকাল কি খাবে। বাড়িতে ও ছাড়াও আরো একজন আছে, সেকি আর এই রাজমা খেতে পারবে? ফ্রিজে ফল নেই, দুধ নেই, ঝিনুক নিশ্চয় ওর মতন গ্রিন টি খায় না ওর জন্য অন্তত চাপাতা আনতে হবে। husband wife golpo

ওর বাড়ির কেউই দুধ দেওয়া চা খায় না শুধু মাত্র বোন ছাড়া তাই বোনের জন্যেই ওর বাড়িতে চা এনে রাখা হয়। খাবার নিয়ে বসার ঘরে এসে দেখে ঝিনুক চুপচাপ সোফায় বসে টিভি চালিয়ে কিছু একটা সিনেমা দেখছে, দেখছে বললে ভুল হবে চলন্ত টিভির দিকে তাকিয়ে রয়েছে একভাবে। ঝিনুকের শুন্য চোখের ভাষা দেখে রিশুর খুব খারাপ লাগে, মানুষ হয়ত যা চায় সর্বদা তাই পায়না আর মানুষ যা পায় বাকিটা জানে না ঠিক রিশু।

চুপচাপ খাওয়া শেষ করে নিজের ঘরে ঢূকে পরে রিশু। খাটের ওপরে আধা শোয়া হয়ে একটা বই খুলে পড়তে শুরু করে দেয়, ফাইব্রাস ডাইস্প্লাসিয়া নিয়ে একটা নতুন পেপার লিখবে তাই নিয়ে পড়াশুনা করতে হবে।

হাঁটু মুড়ে সোফার ওপরে বসে টিভির দিকে তাকিয়ে হারিয়ে গিয়েছিল ঝিনুক। মাঝে মাঝে ওর ভীষণ ভয় লাগে, পার্থ নিশ্চয় ওর বিয়ের সময়ে কাউকে পাঠিয়েছিল খোঁজ নেওয়ার জন্য। যদিও ফোন ভেঙ্গে দিয়েছে কিন্তু ছেলেটার ওপরে একদম বিশ্বাস নেই, হয়ত এতক্ষনে অন্যদের কাছেও ওর অর্ধনগ্ন ছবি পৌঁছে গেছে, হয়ত ইন্টারনেটে ছড়িয়ে গেছে এতদিনে ওর বাথরুমে তোলা অর্ধনগ্ন ছবি। ভীষণ কান্না পায় ঝিনুকের, ওর জীবনের স্বপ্ন গুলো এইভাবে চৌচির হয়ে ভেঙ্গে যাবে কোনদিন ভাবেনি। husband wife golpo

যখন পার্থের সাথে প্রেম হয়নি তখন থেকেই ওর স্বপ্ন ছিল যার সাথে জীবন কাটাবে সে যেন ওকে খুব ভালোবাসে, একটু দাম্ভিক প্রকৃতির ছিল বলে সবসময়ে নিজের রূপচর্চা নিয়েই পরে থাকত। চেয়েছিল যখন ওর ভালোবাসার মানুষ কাজ সেরে ঘরে ফিরবে তখন ও সেজেগুজে তৈরি থাকবে তাকে আহ্বান করার জন্য। দুই হাত মেলে উজাড় করে দেবে নিজেকে সেই দয়িতের বাহুডোরে।

যে মানুষটা ওই ঘরের মধ্যে শুয়ে আছে এতক্ষনে তার চরিত্র সম্বন্ধে এক ধারনা পরিষ্কার হয়ে যায় ঝিনুকের কাছে। মানুষটা খুব কম কথা বলে, মেধাবী রুচিবোধ সম্পন্ন নম্র ব্যাক্তি, নিজের কাজ নিজেই করতে ভালোবাসে, বাড়ির প্রতি টান একটু বেশি সেটা ওর মা অনেক আগেই জানিয়ে দিয়েছে। মনে হয় না আধুনিক পোশাক আসাকে বিশেষ রুচি আছে ওর।

একটু পরে কাজের মেয়ে এসে যাওয়াতে ঘরের মধ্যে এতক্ষন যে একটা বদ্ধ ভাব ছিল সেটা একটু কেটে যায়। রাতের খাওয়ার ব্যাপারে ঝিনুকে জিজ্ঞেস করাতে ঝিনুক জানিয়ে দেয় যে যা খুশি খেতে প্রস্তুত, ওর স্বাধীনতা অনেক আগেই খর্ব হয়ে গেছে সেখানে রান্নার ব্যাপারে নিজের মতামত জানিয়ে কি হবে। "রাতে রাজমা চলবে?" husband wife golpo

শুনে মুখ শুকনো হয়ে যায় ঝিনুকের, দুপুরে রাজমা খেতে যে ঝিনুকের একদম পছন্দ হয়নি সেটা বুঝতে পারে রিশু। রিশু কাজের মেয়েকে রাতের রান্না করতে বারন করে দেয়, বলে যে রাতে ওরা বাইরের কিছু একটা খেয়ে নেবে।

কাজের মেয়ে চলে যাওয়ার পরে, রিশু ঝিনুক কে বলে, "মারকেট যাবো, তুমি কি যাবে?"

এই বদ্ধ ঘরের মধ্যে দম আটকে আসছিল ওর, একটু বাইরের বাতাসে শ্বাস নিতে পারলে যেন বেঁচে যায়, খুব ইচ্ছে করে একবার বাইরে বের হই তারপর হাত ছেড়ে পালিয়ে যাবো। মাথা দোলায় ঝিনুক, "হ্যাঁ একটু বের হলে ভালো হত।"

চুপচাপ নিজের ঘরের মধ্যে ঢুকে আলমারি খুলে বাড়ি থেকে আনা পোশাকের দিকে একভাবে তাকিয়ে থাকে। ভীষণ মুশকিলে পরে গেল ঝিনুক, সালোয়ার কামিজ খুব কম পরে ঝিনুক তাই এখানে যা পোশাক আনা হয়েছে তাতে বিশেষ কোন ভালো সালোয়ার কামিজ নেই। আলমারি ভর্তি শুধু মাত্র জিন্স, শারট, টপ, হাফ প্যান্ট, প্লাজো ইত্যাদি। এইসব পোশাক পরে যদি রিশুর সাথে বের হয় তাহলে ভীষণ বেমানান লাগবে। husband wife golpo

জামা কাপড় পড়ে তৈরি হয়ে ঝিনুকের ঘরের মধ্যে উঁকি মারতেই দেখে যে ঝিনুক আলমারি খুলে ঠায় দাঁড়িয়ে আবার হারিয়ে গেছে। এবারে রিশু আর হাসি থামাতে পারে না, "তুমি মাঝে মাঝে কোথায় হারিয়ে যাও বল'ত?"

ভীষণ রাগ হয় ঝিনুকের, মনে হয় যেন ঠাস করে এক থাপ্পর মারে রিশুকে, আমি কোথায় হারিয়ে যাই না যাই সেটা তোমার দেখে কি দরকার, তোমার মুখে ত রা কাটে না একদম আবার এখানে ইনিয়ে বিনিয়ে কি জিজ্ঞেস করতে এসেছ? তাক থেকে একটা সালোয়ার কামিজ হাতে নিয়ে ঠোঁটে একটু হাসি টেনে বলে, "এটা খুঁজছিলাম।"

মাথা দোলায় রিশু, উঁকি মেরে আলমারির ভেতরে তাকিয়ে দেখে যে তাক ভর্তি জিন্স, শর্টস, টপ প্লাজো এইসব আধুনিক পোশাকে ভর্তি। খুব বলতে ইচ্ছে করছিল তখন, না না জিন্স টপস এইসব পড়তে পারো, তোমাকে সালোয়ার কামিজে নয় আধুনিক পোশাকে বেশি সুন্দরী দেখায়। মাথা দোলায়, "আচ্ছা, একটু তাড়াতাড়ি কর প্লিজ।" husband wife golpo

হাসতে গিয়েও বাধা পায় ঝিনুক, মাথা দুলিয়ে বলে, "আচ্ছা তৈরি হয়ে নিচ্ছি।"

অগত্যা রিশু বসার ঘরের সোফায় বসে টিভি খুলে অপেক্ষা করা ছাড়া আর কোন গতি নেই। শপিং করার কথা শুনলে ওর বোন যে সাজতে কত সময় নেয় সেটা ওর অজানা নয় তাই ভালো ভাবেই জানে মেয়েদের কত সময় লাগবে সাজতে। অনেকক্ষণ পরে নুপুরের নিক্কন কানে যেতেই ঘাড় ঘুরিয়ে সেই নুপুরের অধিকারিণীর দিকে তাকিয়ে দেখে। এবারে আর একপাশে করে চুল আঁচড়ায়নি ঝিনুক, মাঝখানে সিঁথি করে মাথার পেছনে একটা খোঁপা করে বাঁধা চুল, বাঙালি বৌদের মতন সিঁথির মাঝে জ্বলজ্বল করছে এক চিলতে সিঁদুর।

কচি কলাপাতা রঙের আঁটো কামিজটা ঝিনুকের নধর দেহবল্লরীর সাথে ভিজে পাতার মতন লেপটে রয়েছে, গালের দাগ গুলো অনেক আবছা হয়ে এসেছে, চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলতে ভুলে যায়, ভাসা ভাসা কাজল কালো চোখ জোড়ায় একটু বেদনা একটু হারিয়ে যাওয়ার অব্যাক্ত রচনায় রচিত। ভীষণ সুন্দরী মেয়েটা কিন্তু তাও খোলা মরে কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না রিশু। husband wife golpo

কামিজের ওপরে একটা ছোট কারডিগান দেখে রিশু মাথা দুলিয়ে হেসে ফেলে, "এতে কিছু হবে না। তোমার আর কোন জ্যাকেট নেই?"

মাথা দোলায় ঝিনুক, "এছাড়া একটা জিন্সের জ্যাকেট আছে আর ওই নীল রঙের ওভারকোট আছে।"

চিন্তায় পরে যায় রিশু, দিল্লীর এই শীতে এই জ্যাকেটে কিছুই হবে না, খরচা বাড়বে এবারে, যদিও চিন্তা খরচা নিয়ে নয়, "ওই ওভারকোটটাই এখন পর, আসছে রবিবার তোমার জন্য শপিং করতে যাবো। আর হ্যাঁ, একটা শাল গলায় জড়িয়ে নিও বাইরে কিন্তু হাওয়া চলছে।"

বাধ্য মেয়ের মতন আবার ঘরে ঢুকে আলমারি খুলে একটা শাল গলায় জড়িয়ে নেয়, রিশুর আদেশের সামনে ওর গলার আওয়াজ বের হয় না, বাড়িতে থাকলে এতক্ষনে বাড়ি মাথায় করে তুলত, ধ্যাত এর ওপরে আবার কেউ শাল নেয় নাকি? কিন্তু সামনে যে দাঁড়িয়ে তার সামনে জোর গলায় কথা বলতে খুব বাধে ওর।

বাইকে চড়ে রিশু আর ওর মাঝে হাজার যোজনের ব্যাবধান রেখে বসে পরে। কাঁধের ওপরে কোমল চাঁপার কলি আঙ্গুলের পরশে ঘাড় ঘুরিয়ে একবার তাকায় ঝিনুকের দিকে, "ঠিক করে বসেছ?" husband wife golpo

হ্যাঁ হ্যাঁ, আমি এর আগেও বাইকে বসেছি, অত আদিখ্যেতা না দেখিয়ে চালাও, ছোট উত্তর দেয় ঝিনুক, "হ্যাঁ।"

বাইকটা শুরু হতেই পেছনের দিকে একটু ঝুঁকে পরে ঝিনুক, কোলের কাছে পার্সটা শক্ত করে ধরে নেয় সেই সাথে রিশুর বলিষ্ট কাঁধের ওপরে আলতো করে হাত রেখে নিজের ভার সামলে নেয়। কনকনে ঠান্ডা হাওয়ায় কান গাল অবশ হয়ে যায় ঝিনুকের। অনেক ছোট বেলায় একবার মানালী গিয়েছিল বাবা মায়ের সাথে ঘুরতে সেখানে বরফ নিয়ে খেলার সময়ে বুঝেছিল ঠান্ডা কাকে বলে।

বাড়ি থেকে বাজার বেশি দূরে নয়, মিনিট দশেকের মধ্যেই বাজারে পৌঁছে যায়। এইটুকু পথ অনায়াসে হেঁটেই আসতে পারত কিন্তু এইভাবে খালি রাস্তা ধরে ঝিনুকের পাশাপাশি হাঁটতে একটু বিব্রত বোধ করছিল রিশুর তাই বাইক নিয়ে আসা।

বাইরে বেড়িয়ে ঝিনুকের মনে হয় যেন স্বর্গ হাতে পেয়েছে। এতক্ষন ওই ঘরের মধ্যে বন্দিনী জীবন যাপন করছিল, যেন এক রাক্ষস ওকে বন্দী করে রেখে গিয়েছিল। বাজারে নেমে চারপাশে দেখে ঝিনুক, এই বাজারে প্রচুর বাঙালি ভর্তি, দেখে মনেই হয় না যে এটা কোলকাতা নয়। husband wife golpo

মাছের বাজারের দিকে পা বাড়াতেই নাক কুঁচকে ঝিনুক জানিয়ে দেয় যে ওর মাছ পছন্দ হয়, মাছ রান্না করতে জানে না। সে কথা শুনে হেসে ফেলে রিশু। বাজারের পাশের দিকে একটা রেস্টুরেন্ট ছিল, রাতের রান্না করতে বারণ করে দিয়েছিল বটে কিন্তু রেস্টুরেন্টে বসে খাওয়ার মতন মানসিক অবস্থা ওদের কারুর ছিল না।

রিশু ঝিনুককে জিজ্ঞেস করে, "রাতে কি খাবে? কাজের লোক ত কিছু রান্না করে যায়নি।"

বাইরে বেড়িয়ে ঝিনুকের মন একটু হাল্কা হয়, তাই একটু হেসে বলে, "দেখা যাবে খানে।"

এতক্ষন পরে সুন্দরীর ঠোঁটে হাসি দেখে রিশুর বেশ ভালো লাগে, "পাশে একটা বিরিয়ানি টেক এওয়ে আছে, প্যাক করে নিয়ে যাই?"

কোলকাতায় আজকাল যেখানে সেখানে বিরিয়ানির দোকান, কোন ছুতো পেলেই সবাই এই বিরিয়ানি সেই বিরিয়ানির দোকানে ঢুকে পারটি দেয়, ঝিনুকের বিরিয়ানি খাওয়ার একদম ইচ্ছে ছিল না। নাক কুঁচকে আপত্তি জানিয়ে বলে, "বিরিয়ানি নয় এখানের খাবার কিছু পাওয়া যায় না, মানে নর্থ ইন্ডিয়ান ফুড?" husband wife golpo

রিশু ঝিনুককে জিজ্ঞেস করে, "আফগানি চিকেন তন্দুরি আর বাটার নান খেয়েছ?"

ঝিনুক উত্তর দেয়, "না খাইনি, কেমন খেতে?"

রিশু একটু হেসে উত্তর দেয়, "মন্দ নয়, আমার তো ভালো লাগে।" এতক্ষন ঘর বন্দী থাকার পরে বাইরে বেড়িয়ে দুজনের বেশ ভালো লাগে। রিশু ঝিনুকের গালের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে, "অয়েন্টমেন্টটা ঠিক ভাবে লাগাচ্ছো ত?"

বাপরে কত যেন ওর ওপরে নজর, অফিস ফেরত একবার দেখল না ঠিক ভাবে। মাথা দোলায় ঝিনুক, "হ্যাঁ।"

খুব জানতে ইচ্ছে করে রিশুর কেন বোকার মতন নিজেকে কষ্ট দিয়েছিল ঝিনুক, কৌতূহলী মন টাকে বেঁধে রেখে উত্তর দেয়, "হ্যাঁ, লাগিও এক সপ্তাহের মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে।"

কাঁচা সবজি, ডিম, চা, ঝিনুকের জন্য চপ্পল ইত্যাদি কেনাকাটা করতে করতে বেশ রাত হয়ে যায় ওদের। বাড়ি ফিরে যথারীতি আফগানি চিকেন আর বাটার নানের অর্ডার দেওয়া হয়। খেতে বেশ ভালোই লাগে ঝিনুকের এই ধরনের খাবার আগে কোনদিন খায়নি, কোলকাতায় তন্দুরি চিকেন অনেকবার খেয়েছে কিন্তু এখানের এই আফগানী তন্দুরি খায়নি এর আগে। husband wife golpo

খাওয়া শেষে আবার সেই আগের মতন যে যার ঘরের মধ্যে ঢুকে পরে, তবে এইবারে গতরাতের মতন মুখের সামনে দরজা বন্ধ করেনি ঝিনুক। রাতের দিকে ভিডিও কল করে ঝিনুক বোনের সাথে গল্প করেছিল অনেকক্ষণ।

বদ্ধ পরিবেশ বেশ হাল্কা হলেও দুইজনের মধ্যে কথাবার্তা বিশেষ হত না। দিনের মধ্যে কয়েকটা মেসেজ, "খেয়েছ?" উত্তর আসত, "হ্যাঁ, তোমার খাওয়া হয়েছে?" উত্তর আসত, "এই যাবো ক্যান্টিনে" হয়ত কখন রিশু সময় পেলে ফোন করত, "খেয়ে নিও।" উত্তর আসত "আচ্ছা"। "কি করছ, কটা ওটি ছিল আজকে?" অথবা "সকালে কি খেলে? কাজের লোক কি রান্না করে গেল?" এই ধরনের দীর্ঘ প্রশ্ন উত্তর দুইজনেই এড়িয়ে যেত। রাতে খাওয়ার সময়েও দুইজনে সামনা সামনি বসে খাওয়া সেরে ফেলে।

চুপচাপ খেয়ে দেয়ে যে যার নিজের ঘরে ঢুকে পড়ত, ঝিনুক নিজের ল্যাপটপ খুলে কখন বন্ধুদের সাথে গল্প করত অন্য দিকে রিশু নিজের পড়াশুনা আর পেপার নিয়েই ব্যাস্ত থাকত। তবে রোজ দিন এই ঠান্ডায় ভোর চারটেতে উঠে পড়ত ঝিনুক, রিশু হসপিটাল বেড়িয়ে যাবে তখন কি আর ঘুমিয়ে থাকা যায়। husband wife golpo

দরজায় দাঁড়িয়ে ঝিনুকের খুব ইচ্ছে করত বলতে, সাবধানে যেও, কিন্তু সে কথা বলতে পারত না। শুধু চেয়ে থাকত বারান্দা দিয়ে যতক্ষণ না রিশুর বাইক রাস্তার বাঁকে হারিয়ে যায়। বাইকে কিক মেরে একবার ওর বারান্দায় দেখা চাই, আবছা অন্ধকার হলেও দেখতে পেত ঝিনুকের চোখ দুটো, চোখা চুখি হলেই একটু হাত উঠিয়ে দিত ঝিনুক, ভদ্রতার খাতিরে একটু মাথা নোয়াত রিশু।

দেখতে দেখতে রবিবার চলে এলো, ঝিনুকের ভোর বেলা ওঠার তাড়া নেই, রিশুর হসপিটালে দৌড়ানো নেই। তবে রোজকার অভ্যেসের জেরেই রিশুর ঘুম আগেই ভেঙ্গে যায়। দাঁত ব্রাশ করতে উঠে দেখে ঝিনুকের রুমের দরজা তখন বন্ধ, মনে মনে হেসে ফেলে রিশু, না থাক আজকে আর জাগিয়ে কাজ নেই। রোজদিন ওর জন্য সাত সকালে উঠে পরে, তারপরে ঠিক ভাবে ঘুমায় কি ঘুম হয় না জানা নেই।

গত রাতেই খাওয়ার সময়ে কথা হয়েছিল যে পরেরদিন শপিং এ যাবে, সেই জন্য এটিএম থেকে টাকা তুলেছিল। টাকা কেন তুলছো, আমাকে বল তোমার কি চাই? না সেটা মুখে আনতে গিয়েও আনতে পারেনি রিশু। হয়ত এখন ওদের মাঝে সহস্র যোজনের দুরত্ব তাও রিশু ভেবে রেখেছিল যে ঝিনুক যা কিনতে চায় তাই কিনে দেবে। husband wife golpo

রান্না ঘরে ঢুকে নিজের জন্য এক কাপ চা বানায়, দুধ ছাড়া, আদা তুলসি পাতা দেওয়া শুধু মাত্র পাতা দিয়ে চা তৈরি করে খায়। বসার ঘরের সোফায় বসে ভাবে গত কয়েকদিনের কথা, এমনিতে দুটো ওটি করতেই অনেক সময় চলে যেত, যদি দেখত যে তৃতীয় ওটি বেশি সময় নেবে তখন অন্য কাউকে বলে দিত করতে। একটা না হোক তবে দেড়টা কি দুটোর মধ্যে বাড়ি ফিরে আসত রিশু। যদিও ওদের কথাবার্তা খুব সীমিত তবুও ওই যে পাশের ঘর থেকে নুপুরের নিক্কন শোনা যায়, সেটাই অনেক।

ওর সাথে কথা না বললেও যখন ওর বাড়ির সাথে কথা বলত অথবা নিজের বোনের সাথে কথা বলত তখন গলা শুনে মনে হত যে ওদের মাঝের দুরত্ব একদম নেই। শুধু মাত্র রিশুর মা ছাড়া বাকি কারুর চোখে পরেনি ওদের আসল ব্যাবধান। ফোন রাখার পরেই বাড়িতে সেই আগের মতন নিস্তব্ধতা নেমে আসত। মায়ের সাথে রাতে কথা বলার সময়ে রোজদিন জিজ্ঞেস করত, "কেমন আছিস বাবা?" ছোট তিনটে শব্দের মধ্যে প্রচুর না বলা প্রশ্ন লুকিয়ে। হেসে ফেলত রিশু, "তোমার কথা মতন হাঁটছি, দেখা যাক কবে পৌঁছানো যায়।" husband wife golpo

দরজার ওপাশে খুট খাট আওয়াজ পেয়েই ঘুম ভেঙ্গে যায় ঝিনুকের, উঠে পরল নাকি ডাক্তার? ধুর ব্যাঙ এর জ্বালায় একটু শান্তিতে ঘুমানো যায় না। স্নান করার পরে তোয়ালে দিয়ে গা মোছার সময়ে নুপুরের মধ্যে মাঝে মাঝে তোয়ালে আটকে গিয়ে ভীষণ অসুবিধে হত, কোনদিন পরেনি অভ্যাস নেই, ধ্যাত খুলেই ফেলা যাক। কিন্তু যখন রিশু ওই নুপুরের রিনিঝিনি আওয়াজ শুনে ওর দিকে তাকিয়ে থাকত তখন এক মিষ্টি অনুভুতিতে ওর হৃদয় কোন অজানা কারনে কাতর হয়ে উঠত।

অনুভুতি গুলো যদিও ওর অজানা নয় তবুও ওর মনে হত এ এক নতুন অনুভুতি ওর হৃদয়ে দোলা লাগিয়েছে, আর সেই জন্য পা থেকে নুপুর খোলেনি। আড়ামোড়া ভেঙ্গে দরজা খুলে দেখে যে সোফায় বসে একা একা চা খাচ্ছে। একটু রাগ হয় ওর, একটু অপেক্ষা করলে মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যেত নাকি? চোখা চুখি হতেই মিষ্টি হাসি দেয় ঝিনুক। একটা সোয়েটার পরে বাথরুমে ঢুকে পরে ঝিনুক। রিশুও ঢুকে পরে রান্না ঘরে, নব বিবাহিতা স্ত্রীর জন্য চা বানাতে। husband wife golpo

বাথরুম থেকে বের হতেই রিশু ওকে ডাকে, "এই নাও চা।"

চায়ের কাপের দিকে তাকিয়ে মুখ বেঁকায় ঝিনুক, "এই চা আমি খাই না, শুধু গরম জল।"

রিশু একটু অবাক হয়েই জিজ্ঞেস করে, "তাহলে কি খাও?"

রান্না ঘরের দিকে যেতে যেতে ঘাড় বেঁকিয়ে বলে, জানে না যখন তখন অত আদিখ্যেতা দেখিয়ে বানাতে কেন গেছিল? "আমি বানিয়ে নেব।"

নিজের চা বানিয়ে সোফায় একটু তফাত হয়ে বসে রিশুকে জিজ্ঞেস করে, এই সাদা চা খেয়ে কি পাও? দুধ নেই, চিনি নেই, ওয়াক থু। মুক প্রশ্নটা মুক থেকেই যায়, তার জায়গায় অন্য প্রশ্ন বের হয়, "সান্ডউইচ বানাবো?"

মাথা দোলায় রিশু, "হ্যাঁ আপত্তি নেই।"

চা খেতে খেতে রিশু ঝিনুককে বলে, "লাঞ্চের পরে বেড়িয়ে যাবো, বেশি রাত হয়ে গেলে আবার তোমার ঠান্ডা লাগতে পারে।"

আহা রে, মেয়েদের বেড়াতে বের হলে ঠান্ডা লাগে না বুঝলে ডাক্তার, মাথা দোলায় ঝিনুক, "ঠিক আছে।"

চা শেষ করে রিশু ওকে বলে, "কাল থেকে আমার জেনারেল ডিউটি, তিনদিন ওপিডি আর দুই দিন ওটি।"

বিশেষ বুঝল না এই কথা তাও মাথা নাড়িয়ে দিলো ঝিনুক, "আচ্ছা।" husband wife golpo

চা খাওয়া শেষে নিজের ঘরের মধ্যে ঢুকে একটা সিরিঞ্জ আর কয়েকটা ছোট বোতল হাতে নিয়ে বেড়িয়ে আসে রিশু। সিরিঞ্জ দেখে হাজার প্রশ্ন নিয়ে ওর দিকে তাকায় ঝিনুক, কি করতে চলেছে? ঝিনুকের হাতে একটা ছোট প্লাস্টিকের বোতল ধরিয়ে দিয়ে বলে, "কাল সকালে ইউরিন দিও একটা টেস্ট করাব।" আর সিরিঞ্জ দেখিয়ে বলে, "তোমার একটা ব্লাড টেস্ট করাবো।"

খানিকটা আশ্চর্য হয় ঝিনুক, সেই সাথে একটু বিরক্তি ভাব ফুটে ওঠে চেহারায়, তুমি কি আমাকে সন্দেহ করছ যে আমি পার্থের সাথে সহবাস করে কোন রোগ বাধিয়েছি কি না? "কেন আমার কি হয়েছে?"

একটু হাসে রিশু, "না তোমার কিছু হয়নি, তবে মেয়েদের অনেক রকমের গ্যানোকজিকাল প্রবলেম হয়, ইউরিন ইনফেক্সান, থাইরয়েড বা কোন হরমোনাল প্রবলেম থাকলে আগে থেকে ধরা পরলে ওষুধে সেগুলো কন্ট্রোলে রাখা যায়।"

মুখ ব্যাজার করে উত্তর দেয় ঝিনুক, "না আমার কিছু হয়নি, আমি রক্ত দেব না।"

হেসে ফেলে রিশু, "আমি লিটার লিটার রক্ত নেব নাকি?" হাতের দুটো ছোট বোতল দেখিয়ে বলে, "এই ব্যাস এইটুকু।"

প্রচন্ড ইঞ্জেকশানের ভীষণ ভয় ঝিনুকের, জোরে মাথা ঝাঁকিয়ে বলে, "উরি বাবাআআ নাআআআ." বলেই সোফা ছেড়ে উঠে পরে। husband wife golpo

হসপিটালে প্রচুর লোককে দেখেছে এমন করতে। চোখ নাক মুখ বন্ধ করে থাকে যখন ইঞ্জেকশান দেওয়া হয় দেখে মনে হয় যেন ওদের বুকে কেউ ছুরি ঢুকিয়ে দিয়েছে। যেভাবে সারা অঙ্গে ঢেউ তুলে এক ঝটকায় সোফা ছেড়ে উঠে পরল তাতে হাসি পেয়ে যায় রিশুর। ছন্দময় তালে মত্ত চলনে চোখের বাণে ওর বুকে আঘাত হেনে চলে গেল। হাতে সিরিঞ্জ নিয়ে সোফায় বসে মিটিমিটি ঝিনুকের দিকে তাকিয়ে হাসে, পাগলি মেয়ে, ফুচকা খেতে দেব, ম্যাবেলিনের লিপস্টিক পাবে, ম্যাকএর বেস কিনে দেব।

মরন দশা, ওই ভাবে দাঁত বের করে হাসার কি হয়েছে? আবার ডাকছে দেখো। যাবো না যাও, শপিং গেল মাথায় উঠে। মুখ কাচুমাচু করে কাতর কন্ঠে জিজ্ঞেস করে, "রক্ত না নিলেই নয়?"

ঝিনুকের কাচুমাচু মুখ দেখে হাসি থামাতে পারে না রিশু, বুড়ো আঙ্গুল আর তর্জনী মাঝে এক ইঞ্চি ব্যাবধান দেখিয়ে বলে, "এই এত্তটুকু নেব, একদম লাগবে না। একটা টিএসএইচ আর এলএফটি করাব।"

শান্ত পায়ে হরিণীর মতন দুলকি চালে রিশুর সামনে এসে মুখ ব্যাজার করে আদুরে কন্ঠে বলে, "লাগবে না'ত, সত্যি বলছ?"

ফর্সা হাত, হাতের পাতায় এখন মেহেন্দির রঙ একটু লেগে আছে। রোজদিন বিকেলে যখন ওর সাথে বাজারে বের হয় তখন শরীরে কোন পারফিউম লাগায়, কিন্তু সেদিন সকালে একদম কাছ থেকে ওর গায়ের গন্ধে মাতাল হয়ে যায় রিশু, ভোরের ফোটা শিউলি ফুল, ইচ্ছে করছিল হাত দুটো টেনে পাশে বসায়। husband wife golpo

বিয়ের পাঁচদিন কেটে গেছে কিন্তু সেই যে বিয়ের দিনে ওর হাতের ওপরে হাত রেখেছিল ঝিনুক তারপর আর সেই পদ্ম কুড়ির মতন কোমল হাত দুটো আর নিজের হাতে নেওয়া হয়নি। দুই কব্জি ভরা সোনার চুড়ি, সোনা দিয়ে শাঁখা পলা বাঁধানো, মাঝে মাঝেই ছনছন করে বেজে ওঠে। এই মিষ্টি মেয়টা কি ভাবে অসৎ সংসর্গে পড়েছিল ভেবে পায় না।

সোফায় বসতে অনুরোধ করে বলে, "না রে বাবা একদম লাগবে না।"

চুপচাপ সোফার ওপরে রিশুর পাশে বসে পরে ঝিনুক। সোয়েটারের হাতা গুটিয়ে ডান হাত এগিয়ে দেয় রিশুর দিকে। একটা রাবারের বেল্ট দিয়ে কুনুইয়ের ওপরে বাঁধতেই কোকিয়ে ওঠে ঝিনুক, ছটফট করতে করতে বলে, "লাগছে ত।"

রিশু ওকে বলে, "হাত মুঠো করো।"

ইঞ্জেক্সানের দিকে তাকিয়ে কাঁদুনে চেহারা করে হাত মুঠো করে মিউ মিউ করে ওঠে, "উম্মম্মম লাগছে হাতে."

মেয়েটা এত ডানপিটে এত চঞ্চল তাও এই ইঞ্জেক্সানের ভয়? হাসি পেয়ে যায় রিশুর। ওর ডান হাত শক্ত করে ধরে, স্পিরিটে একটু তুলো ভিজিয়ে হাতের ওপরে আলতো করে ডলে দিয়ে জিজ্ঞেস করে, "আচ্ছা কি কি শপিং করবে কিছু ভেবেছ? কি রঙের জ্যাকেট কিনবে?"

আদিখ্যেতা দেখ, আবার জিজ্ঞেস করছে কি শপিং করবে। "জানি না যাও, আমি যাবো না তোমার সাথে শপিং করতে।" মাথা ঝাঁকিয়ে বলে ঝিনুক। husband wife golpo

ফর্সা হাতের মাঝখানে শিরা খুঁজতে ব্যাস্ত রিশু। ঝিনুকের বাজুর মোলায়ম ফর্সা ত্বকের ওপরে দুটো আঙ্গুল দিয়ে একটু জোরেই বার কতক বাড়ি মারতেই লাল হয়ে যায় সেই স্থান। যে ভাবে মেয়েটা ছটফট করছে, নিডেল না বেঁকে যায়। এবারে একটা ধমক না দিলে কাজে দেবে না।

বাম হাতে ঝিনুকের ডান হাত শক্ত করে ধরে একটু ধমক দিয়েই বলে, "একদম ছটফট করবে না, নিডেল বেঁকে যাবে।"

যেই শুনেছে যে নিডেল বেঁকে যাবে, সেই ঝিনুকের কান্না শুরু। রিশুর হাত ছাড়িয়ে এক লাফে সোফা থেকে উঠে পরে, "তুমি ডাক্তার না হাতির মাথা, আমি রক্ত দেব না যাও।"

ঝিনুক নিজের হাতে বাঁধা রাবারের বেল্ট খুলে ছুঁড়ে মারে রিশুর দিকে। হাতে সিরিঞ্জ নিয়ে বসে থাকা ছাড়া আর কোন উপায় নেই, ঝিনুকের কান্ডকারখানা দেখে হেসে ফেলে রিশু। ইচ্ছে করছিল মেয়েটাকে এক ধমক দিয়ে চুপ করিয়ে দেয়, অত ভয় পাওয়ার কি আছে? কিন্তু ওই মিষ্টি অনুরাগে রক্তিম ঝিনুকের লালচে গালের দিকে তাকিয়ে সেই ধমকের কথা ভুলে যায়। husband wife golpo

একটু পরেই ল্যাবের লোক আসবে রক্ত নিয়ে যেতে, তাকে আগে থেকেই আসতে বলেছিল। নিরুপায় রিশু আরো একবার চেষ্টা করে, মাথা দুলিয়ে ইশারায় ঝিনুককে ডাকে। ঝিনুক ততক্ষনে শোয়ার ঘরের দরজার আড়ালে লুকিয়ে পড়েছে, পাছে ওর হাত ধরে টেনে নিয়ে যায় সেই ভয়ে। বসার ঘর যেন এক রণক্ষেত্র, এদিকে হাতে সিরিঞ্জ নিয়ে রিশু অন্যপাশে শোয়ার ঘরের দরজার আড়ালে দাঁড়িয়ে ঝিনুক।

শেষ পর্যন্ত হাল ছেড়ে দেয় রিশু, "কাল সকালে হসপিটাল যাওয়ার আগে কিন্তু আমি ব্লাড নিয়ে যাবো।"

দরজার আড়াল থেকে একটু বিরক্তি মেশানো একটু হাসি মাখানো উত্তর আসে, "ধুস, কাল আমি দরজাই খুলবো না।"

শেষের পাতায় শুরু - 16 by Pinuram

Related posts:
 
Back
Top