bangla love story choti. রোদ্দুর যখন বাড়ি ফেরে তখন সন্ধ্যা গড়িয়ে গেছে। ভেজা কাপড়ে ছেলেকে ফিরতে দেখেই রেগে ওঠে সৃষ্টি।
- ইসস এত্তো বড় হয়েছিস আজো কান্ডজ্ঞান হলোনা!! একটা অসুখ না বাধালেই হয়না?
রোদ্দুর এর গম্ভীর মুখ দেখে আর কিছু বলে না।
- আচ্ছা হয়েছেটা কি তোর বলতো? সকালে ওইভাবে বেরিয়ে গেলি, এখন বাড়ি ফিরে মুখ হাড়ি করে আছিস যে??
ততক্ষণে বিছানায় আধা শোয়া থেকে উঠে বসেছে সৃজন।
- আসলে তোমাদের সাথে আমার কিছু কথা আছে।
- হ্যা যা বলার বলিস। এখন আগে কাপড় ছাড়। ঠান্ডা লেগে যাবে তাছাড়া।
- না পরে আগে শোনো।
- বল কি বলবি।
love story
মাথা নিচু করে নেয় রোদ্দুর। আসলে আসলে আমি কালকে ঘুম ভেঙে তোমাদের সব কথা শুনে ফেলেছি।
আৎকে ওঠে সৃষ্টি সৃজন দুজনেই। কাঁপা কাঁপা গলায় সৃষ্টি জিজ্ঞেস করে কি শুনেছিস?
- আসলে আমি তোমাদের মধ্যকার আসল সম্পর্কটা জেনে গেছি।
রোদ্দুর এর কথায় পিনপতন নীরবতা নেমে আসে ঘরের ভেতরে। সৃষ্টির মনে কেবল মনে হতে থাকে ধরনী তুমি দ্বিধা হও, আমি ভেতরে যাই। কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পরে সৃজন ও। আস্তে আস্তে নিজেকে সামলে নেয় সৃষ্টি। এই ভয়টাই ওর ছিলো। ও জানতো একদিন না একদিন ছেলের মুখোমুখি হতেই হবে। মাথা তোলে সৃষ্টি। দেখে রোদ্দুর মাথা নিচু করে আছে।
- রোদ্দুর! love story
মায়ের কন্ঠে চমকে উঠে রোদ্দুর। সৃষ্টির কন্ঠস্বর আজ অদ্ভুত রকমের স্থির একট ভাব।
- আমি জানতাম এই দিন আসবে। তোর মুখোমুখি দাড়াতে হবে আমাকে। হ্যা তুই যা জেনেছিস সত্যি। এখন বড় হয়েছিস তুই। তোর কাছে কাছে লুকানোর কিছু নেই। তুই চাইলে যা কিছু ভাবতে পারিস তবে আমি অনুতপ্ত নই মোটেই। আমি সারাটা জীবন তোর বাবাকেই ভালোবেসেছি, আর বেসেও যাব। এখন তোর যদি মনে হয় যে আমরা ভুল করেছি চাইলে তুই চলে যেতে পারিস। এখন বড় হয়েছিস। আলাদা থাকতে আশা করি কোনো কষ্ট হবেনা তোর।
- মা!!!!
- হ্যা রোদ্দুর। জানি তোর পক্ষে মেনে নেওয়া কঠিন, তবে এটাই সত্য ছোট থেকেই আমরা একে অপরকে ভীষণ ভালোবাসি। একটা অদ্ভুত বন্ডিং ছিলো আমাদের। শুনতে হয়তো আমাদের সম্পর্ক সমাজের চোখে নিষিদ্ধ, পাপ, কিন্তু রোদ্দুর আমি জোর গলায় বলতে পারি, যে অনেক সুখি বিবাহিত সম্পর্কের থেকেও আমরা দুজনে অনেক, অনেক বেশি সুখি।
মায়ের কথায় চোখ ভিজে ওঠে রোদ্দুর এর। love story
- আমি জানি মা। আমার কোনো অভিযোগ নেই তোমাদের প্রতি। আমি গর্ব অনুভব করি তোমাদের ভালোবাসার বন্ডিং দেখে।
রোদ্দুর এর কথায় পরিবেশ টা অনেক হালকা হয়ে আসে। আনন্দ অশ্রু গড়াতে থাকে তিন জনের চোখ থেকেই।
রোদ্দুর ওর বাবা মার কাছে আবারও সব কিছু শুনতে চায় কারা তাদের আজকের এই অবস্থার জন্য দায়ী। রবিউল এর ব্যাপারে সব শোনার পরে চোয়াল শক্ত হয়ে ওঠে রোদ্দুর এর। বাবা মাকে বলে আচ্ছা আমার একটা সন্দেহ হচ্ছে। তোমাদের বাড়িটা কোথায় ছিপ বলোতো??
ঠিকানা শুনে লাফিয়ে ওঠে রোদ্দুর! আচ্ছা তোমাদের বাড়ির সামনে অনেকটা জুড়ে সবুজ ঘাস, মাঝ দিয়ে নুড়ি বেছানো রাস্তা তাইনা? রাস্তার একধারে শ্বেত পাথর এর গোল টেবিল আরেক পাশে ফোয়ারা।
ছেলের মুখে নিখুঁত বর্ননা শুনে আশ্চর্য হয়ে যায় সৃজন আর সৃষ্টি। এক সাথে দুজনেই বলে তুই তুই কিভাবে জানলি?? love story
- আমার নিয়তিই আমাকে চিনিয়েছে। তোমারা দুজনেই শুনে রাখো ওই রবিউল নামক শয়তান এর পাপের ঘড়া পূর্ণ হয়েছে, আর ওকে বধ করবার জন্য গোকুলে আমিই বেড়ে উঠেছি। আমার হাতেই বিনাশ হবে ওর পাপ এর।
ছেলের কথায় ভয় পেয়ে যায় ওরা। সৃষ্টি দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরে রোদ্দুরকে। না না বাবা ওর অনেক ক্ষমতা। আমি চাই না ওসব শায় সম্পত্তি। তুই ভালো থাক বাবা।
এদিকে রবিউল হাসান জেনে গেছে যে মেঘ বস্তির একটা ছেলের সাথে ইদানীং খুব মেলামেশা করছে। খোঁজ নিয়ে জেনেছে কাওরান বাজার এর কাছে একটা বস্তিতে থাকে ছেলেটা। ছেলেটার চোখ ওর খুব পরিচিত!! আর ছেলেটা বলেছে ও নাকি ওর মায়ের চোখ পেয়েছে!! বস্তিতে লোক পাঠিয়েছে ও ছেলেটার মা বাবার খোঁজ করতে। সৃষ্টি যখন স্কুলে যাচ্ছিলো ও জানলোও না যে ওর অজান্তেই কেউ একজন স্মার্টফোনে ওর ছবি তুললো!! love story
ছবিটা যখন রবিউল এর হোয়াটসঅ্যাপ এ মেসেজ করা হলো রবিউল তখন সোফায় গা এলিয়ে দিয়ে আয়েশ করে বেনসনে টান দিচ্ছে। হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ আসার টুং শব্দ হতেই মেসেজ টা ওপেন করে ও। মেসেজ ওপেন করতেই বসা থেকে লাফিয়ে দাড়িয়ে যায় ও। সিগারেট এর ধোঁয়া ফুসফুসে আঁটকে খুকখুক করে কেশে ওঠে। দু চোখ বড় বড় করে তাকায় ফোনের স্ক্রিনের দিকে!! সৃষ্টি!!! এত্তো বছর বাদে ও খুঁজে পেয়েছে!! সার্থক হয়েছে ও।
হোয়াটসঅ্যাপে কিছু নির্দেশনা দিয়ে সিগারেটে ঘন ঘন টান দিতে দিতে ঘরময় পায়চারী শুরু করে রবিউল। উত্তেজনায় দুচোখ চকচক করছে। বিন্দু বিন্দু ঘাম জমছে কপালে। কপালের ঘাম মুছে আসন্ন উত্তেজনায় ছটফট শুরু করলো রবিউল। আর অল্পকিছুক্ষণ তারপরেই সৃষ্টিকে ভোগ করবে। পায়চারী করতে করতে দৃশ্যটা কল্পনা করে শিহরিত হয়ে ওঠে ও বারবার।
সৃষ্টি তখন সবে স্কুলে ঢুকেছে। অফিস-রুমে বসে হাজিরা খাতাটাতে সই করতেই হন্তদন্ত হয়ে ছুটে এলো এক লোক। love story
- আপনাদের মধ্যে সৃষ্টি কে??
দাড়িয়ে যায় সৃষ্টি।
- আমি, আমি সৃষ্টি কেন কি হয়েছে?
- আপনি রোদ্দুর এর মা তো??
- হ্যা।
- এক্ষুনি একবার আমার সাথে চলুন। রোদ্দুর এক্সিডেন্ট করেছে,অবস্থা সিরিয়াস।
মুহুর্তে যেন দু চোখে আধার ঘনিয়ে আসে সৃষ্টির। তাড়াতাড়ি করে উঠে বেড়িয়ে আসে লোকটার সাথে। তার পরেই মনে পরে সৃজন এর কথা।
- ওর বাবাকে একবার জানাতে হতো।
- সমস্যা নেই, আমার সাথে গাড়ি আছে, আপনি বরং উনাকেও সাথে নিন। love story
সৃষ্টি এক ছুটে বাড়ি গিয়ে সৃজনকে জানাতেই ওউ হন্তদন্ত হয়ে বেরিয়ে আসে সৃষ্টির সাথে। ছেলের কথা শুনতেই দুজনেই বেরিয়ে আসে অপরিচিত লোকটার সাথে। হাসপাতালে যাবার নাম করে ওদের দুজনকেই তুলে নেয় গাড়িতে। ছেলের চিন্তায় এতোটাই বিভোর ওরা, যে আশপাশে একটা বারো তাকায় না। গাড়িটা থামতেই দ্রুত নেমে আসে বাইরে। একি!!! কোথায় হাসপাতাল!! বিশ বছরেও বদল হয়নি একটুও! ওরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই ওদের নিয়ে আ লোকটা রিভলবার বের করে কাভার করে ওদের দুজনকে।
- কোনোরকম কোনো চালাকির চেষ্টা করবেন না। সোজা ভেতরে ঢুকুন।
রাগে চেচিয়ে ওঠে সৃষ্টি। হচ্ছেটা কি!!! আমার ছেলে কোথায়!!
- কথা কম। বাঁচাতে চাইলে যা বলছি করুন। বলেই সৃজন এর পিঠে রিভলবার দিয়ে একটা খোঁচা মারে লোকটা। পরতে পরতেও কোনরকম ভাবে ক্র্যাচ দিয়ে পতন ঠেকায় সৃজন। সৃজন এর একটা হাত ধরে সৃষ্টি। অসহায় এর মতো দুজন মিলে এগিয়ে যায় বাড়ির গেটের দিকে। ভেতরে ঢুকতেই চোখ পরে রবিউল এর ওপর। love story
- ওওয়েলকাম ওয়েলকাম। অবশেষে বিশ বছর এর আক্ষেপ ফুরোলো আমার।।
রবিউলকে দেখেই রাগে দাতে দাত পিষে কুত্তার বাচ্চা বলে গালি দেয় সৃজন।
- চোপ। আওয়াজ নীচে। আমি জোরে কথা একদম পছন্দ করিনা।
ততক্ষণে রিভলবারটা হাতবদল হয়ে চলে এসেছে রবিউল হাসান এর হাতে। লোকটা দরজা ভিড়িয়ে দিয়ে বেরিয়ে গেছে বাইরে। এদিকে আজ ভার্সিটি যায়নি মেঘ। নিচে চিল্লাচিল্লি শুনে ও রুম থেকে বেরিয়ে এসে দাঁড়ায় সিড়ির কাছে। নীচে ড্রইংরুমে চোখ পরতেই আৎকে ওঠে। রোদ্দুর এর বাবা মা!!!!! রোদ্দুর এর ফোনে অনেকবার ছবি দেখেছে ও। উনারা কেন এখানে??? আর বাবাই কেনবা পিস্তল তাক করে আছে উনাদের দিকে??? কোনো কিছু না বুঝতে পেরে তারাতাড়ি ফোন দেয় রোদ্দুরকে। love story
- হ্যালো রোদ্দুর!!!
- মেঘ!! কি হয়েছে? এমন লাগছে কেন ভয়েস??
- রোদ্দুর আমি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না!! বাবা এখানে তোমার বাবা মাকে ধরে এনেছে।
- শিট.. ড্যাম ইট আমি আসছি এখনি।
- আমিতো কিছুই বুঝতে পারছি না।
- পরে সব বুঝিয়ে বলব।শুধু জেনে রাখ আমার বাবা মায়ের এ অবস্থার জন্য তোমার বাবাই দায়ী। তোমাদের ওই বাড়ি আসলে আমার বাবা মায়ের। রাখছি এখন। আমি আসছি এখুনি।
ফোন রেখেই দ্রুত পৌঁছে যায় রোদ্দুর। দাড়োয়ান চেনা রোদ্দুরের। মেঘের সাথে কয়েকবার দেখেছে তাই বাধা দেয়না। দ্রুত দরজা ঠেলে রুমে ঢুকে পরে রোদ্দুর। রোদ্দুর ঢুকতেই রবিউল সৃজন সৃষ্টিকে বাদ দিয়ে অস্ত্র তাক করে রোদ্দুর এর দিকে। ততোক্ষণে মেঘ ও নেমে এসেছে নীচতলায়। উদ্ভ্রান্তের মতো চারদিকে তাকায় রবিউল। love story
হাতের অস্ত্র সামনে দিকে বাড়িয়ে ধরে আরেক হাত বারিয়ে হ্যাচকা টানে সৃষ্টিকে টেনে নেয় কাছে। সৃজন উঠে দাঁড়াতে নিলে অস্ত্র দেখিয়ে ধমক দিয়ে বসিয়ে দেয় রবিউল। এক হাতে জড়িয়ে নেয় সৃষ্টিকে। সৃষ্টি ছাড়া পাবার জন্য মোচড়া মুচড়ি শুরু করতেই ক্ষেপে ওঠে রবিউল। মাগি আইজ পাইছি তোরে। শালি সেদিন পালাইছিলি আমার হাত থেকে আজ দেখি বলেই টেনে বুকের আঁচলটা ফেলে দেয় টেনে। শাড়ির আঁচল ফেলে দিতেই লাল ব্লাউজ এ ঢাকা সৃষ্টির বড় বড় দুধ দুটো যেন উপচে বেরিয়ে আসতে চায়।
সেদিকে তাকিয়ে হুপ্স শব্দ করে জিভ দিয়ে একবার লালা টানে রবিউল। দু হাত মুঠ পাকিয়ে ধরে সৃজন। এরপরে রবিউল এর আরেক টানে ব্লাউজ এর তিনটার মধ্যে দুইটা বোতাম ছিড়ে যায়। বোতাম ছেড়া ব্লাউজ ঠেলে বেরিয়ে আসতে চায় যেন দুধ দুটো। ছেড়া ব্লাউজ এর ফাঁক দিয়ে বড় বড় দুধের বোটার চারপাশের গোল খয়েরী অংশটুকুর ও অনেক খানি দেখা যায়। সে অবস্থাতেই সামনে দিকে অস্ত্র বারিয়ে ধরে পেছাতে থাকে রবিউল। পেছাতে পেছাতে হঠাৎ যেন কোনো কিছুর সাথে হোচট খেয়েছে এমন ভাবে থমকে যায় রবিউল। love story
হাতের মুঠোটা শিথিল হতেই মুচড়ে ছুটে এস কোনো রকমে আচলে বুকটা ঢেকে দৌড়ে এসে সৃজন এর বুকে ঝাপিয়ে পড়ে ফুপিয়ে কেঁদে ওঠে সৃষ্টি। এদিকে সবাই তাকিয়ে দেখে রবিউল এর মুঠে আলগা হয়ে ঠক করে মেঝের ওপরে পরল রিভলবার টা। সবার সামনে পা দুটো ভাজ হয়ে আসছে রবিউল এর। কিছুক্ষণ এর মধ্যেই সবার সামনে মুখ থুবড়ে মেঝের উপর পরে যায় রবিউল। সবাই দেখতে পায় রক্তান্ত একটা বটি হাতে দাড়িয়ে আছে মারুফ মেম্বার।
রবিউল পরে যেতেই মারুফ মেম্বার ধারালো বটিটা দিয়ে উপর্যুপরি কোপাতে থাকে দেহটা। মাংসের মধ্যে কোপ পরার থ্যাপ থ্যাপ আওয়াজ ওঠে তার সাথে সাথে উষ্ণ রক্ত ছিটকে এসে ভরে যায় মারুফ মেম্বার এর মুখ। উপর্যুপরি অনেক্ক্ষণ কুপিয়ে উঠে দাঁড়ায় মারুফ মেম্বার। শীতল কণ্ঠে বলে যাইক জীবনে একটা হইলেও ভালা কাম করলাম। তারপরেই কেঁদে ওঠে হুহু করে। কুত্তার বাচ্চা আমার সংসারডা তছনছ কইরা দিছে। love story
এই কুত্তার বাচ্চার কথায় আমার ফেরেশতার মতোন ভাই এর লগে বেঈমানী করছি আমি!! আমার মাইয়াডার জীবনডা নষ্ট কইরা দিছে!! সৃজন সৃষ্টির দিকে তাকিয়ে বলে তরা হইলি আমার রক্ত! মাফ চাওনের মুখ নাই আমার আর তগো কাছে। আল্লাহর কাছে কইস আল্লাহ যেন তর এই পাপী চাচার উপযুক্ত শাস্তি দেয়।।।
পরদিন দেশের সমস্ত পত্র পত্রিকার প্রথম পাতার হেডলাইন হয়
"" পারিবারিক দন্দের জেরে খুন বিশিষ্ট শিল্পপতি রবিউল হাসান। শশুরের দায় স্বীকার। শশুর গ্রেফতার। ""
পরবর্তী তিন মাসে বস্তি ছেড়ে নিজেদের বাড়িতে এসে ওঠে সৃজন আর সৃষ্টি। পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয় মেঘ আর রোদ্দুর এর।
এদিকে কোর্টে রবিউল হত্যা সহ ভাই ভাবিকে হত্যা ও সম্পত্তি আত্মসাৎ এর কথা স্বীকার করে নেয়ায় বিজ্ঞ আদালত ফাসির রায় দেয় মারুফ মেম্বার এর। সৃজন সৃষ্টি ছেলে আর ছেলের বৌকে হানিমুনে যেতে বললে ওরা ওদেরকেও সাথে যেতে বলে। শেষমেশ চারজন মিলেই ওরা যায় আবারো সেই লাউয়াছড়াতে। ওঠে সেই নিসর্গ কটেজেই। সৃজন এর মনে হয় সব কিছু আগের মতোই আছে। love story
সেই এক রকম কটেজ গুলো, জানালায় দাড়ালে দেখা যায় ঢেউ খেলানো চা বাগান, চা বাগান এর মাঝে লাগানো ছায়াবৃক্ষগুলোতে দোল খাচ্ছে চেনা অচেনা নানা জাতের পাখি। সব কিছু সেই আগের মতোই আছে, কেবল ওদের জীবন থেকে হারিয়ে গেছে মূল্যবান বিশটা বছর!!!!
আজ রাতে ছাদের ওপরে বারবিকিউ করবে ওরা। আগের বারে যেখানে পিকনিক পার্টি বসেছিল সেখানেই বারিবিকিউ এর আগুন জ্বালে ওরা। অনেকদিন পরে গিটার হাতে নিয়েছে সৃজন। রাত বারছে, হাজার বছরের পুরোনো রাত সেই রাতের গভিরতার সাথে সাথে ঝঙ্কার তুলে সৃজন এর গিটার। আজ বাবা মাকে খুব মনে পরছে ওর। সৃজন গায়..
" ছেলে আমার বড় হবে, মাকে বলতো সে কথা,
হবে মানুষের মতো মানুষ এক,
লিখা ইতিহাসের পাতায়,
নিজ হাতে খেতে পারতামনা বাবা বলতো,
ও খোকা, যখন আমি থাকবোনা,
কি করবিরে বোকা
এ যে রক্তের সাথে রক্তের দাম, সার্থের অনেক উর্ধ্বে,
হঠাৎ অজানা ঝরে তোমায় হারালাম,
মাথায় আকাশ ভেঙে পরলো,
বাবা কতোদিন কতোদিন দেখিনা তোমায়...
সৃজন এর গানে বাবাআর কথা মনে পরে সৃষ্টির ও। নিজের অজান্তেই গাল বেয়ে গড়াতে থাকে অশ্রুধারা।
অন্যদিকে মারুফ মেম্বার এর ফাসী কার্যকর করা হবে আজ রাতেই। সে জন্য ভালো করে গোসল করানো হলো তাকে। পুলিশ এসে নিয়ে গিয়ে দাড় করিয়ে দিল ফাসীর মঞ্চে। জল্লাদ এসে জম টুপিটা পরিয়ে গলায় দড়ির ফাস পরিয়ে দিলো। জল্লাদ আস্তে আস্তে গিয়ে দাড়ালো লিভারটার কাছে। love story
লিভারটা টেনে দিলেই পায়ের নীচের পাটাতন সরে গিয়ে ঝুলে পরবে মারুফ মেম্বার এর দেহ। জল্লাদ লিভার এর হাতলটা ধরে ঠায় তাকিয়ে আছে জেলার এর হাতে ধরা সাদা রুমালটার দিকে। রুমালটা জেলার এর হাত থেকে ঝুপ করে মাটিতে পড়ামাত্র টেনে দিতে হবে লিভারটা।৷
-------সমাপ্ত------
পারিশিষ্ট : লিখাটা যারা প্রথম থেকে শেষ অবধি পড়েছেন তাদেরকে অনেক ধন্যবাদ। আর হ্যা যারা লিখাটা পড়েছেন লেখক হিসেবে তাদের সবার কাছেই মন্তব্য আশা করছি। আপনাদের মন্তব্যগুলোই আমার লিখার মুল প্রেরণা।
আগামীতে হয়তোবা আবারও দেখা হবে নতুন কোনো গল্প নিয়ে।
ততোদিন পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ্য থাকুন, নিরাপদে থাকুন। ভালোবাসা অবিরাম।
ঠিক যেন লাভস্টোরী টু - 9
Related posts:
- ইসস এত্তো বড় হয়েছিস আজো কান্ডজ্ঞান হলোনা!! একটা অসুখ না বাধালেই হয়না?
রোদ্দুর এর গম্ভীর মুখ দেখে আর কিছু বলে না।
- আচ্ছা হয়েছেটা কি তোর বলতো? সকালে ওইভাবে বেরিয়ে গেলি, এখন বাড়ি ফিরে মুখ হাড়ি করে আছিস যে??
ততক্ষণে বিছানায় আধা শোয়া থেকে উঠে বসেছে সৃজন।
- আসলে তোমাদের সাথে আমার কিছু কথা আছে।
- হ্যা যা বলার বলিস। এখন আগে কাপড় ছাড়। ঠান্ডা লেগে যাবে তাছাড়া।
- না পরে আগে শোনো।
- বল কি বলবি।
love story
মাথা নিচু করে নেয় রোদ্দুর। আসলে আসলে আমি কালকে ঘুম ভেঙে তোমাদের সব কথা শুনে ফেলেছি।
আৎকে ওঠে সৃষ্টি সৃজন দুজনেই। কাঁপা কাঁপা গলায় সৃষ্টি জিজ্ঞেস করে কি শুনেছিস?
- আসলে আমি তোমাদের মধ্যকার আসল সম্পর্কটা জেনে গেছি।
রোদ্দুর এর কথায় পিনপতন নীরবতা নেমে আসে ঘরের ভেতরে। সৃষ্টির মনে কেবল মনে হতে থাকে ধরনী তুমি দ্বিধা হও, আমি ভেতরে যাই। কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পরে সৃজন ও। আস্তে আস্তে নিজেকে সামলে নেয় সৃষ্টি। এই ভয়টাই ওর ছিলো। ও জানতো একদিন না একদিন ছেলের মুখোমুখি হতেই হবে। মাথা তোলে সৃষ্টি। দেখে রোদ্দুর মাথা নিচু করে আছে।
- রোদ্দুর! love story
মায়ের কন্ঠে চমকে উঠে রোদ্দুর। সৃষ্টির কন্ঠস্বর আজ অদ্ভুত রকমের স্থির একট ভাব।
- আমি জানতাম এই দিন আসবে। তোর মুখোমুখি দাড়াতে হবে আমাকে। হ্যা তুই যা জেনেছিস সত্যি। এখন বড় হয়েছিস তুই। তোর কাছে কাছে লুকানোর কিছু নেই। তুই চাইলে যা কিছু ভাবতে পারিস তবে আমি অনুতপ্ত নই মোটেই। আমি সারাটা জীবন তোর বাবাকেই ভালোবেসেছি, আর বেসেও যাব। এখন তোর যদি মনে হয় যে আমরা ভুল করেছি চাইলে তুই চলে যেতে পারিস। এখন বড় হয়েছিস। আলাদা থাকতে আশা করি কোনো কষ্ট হবেনা তোর।
- মা!!!!
- হ্যা রোদ্দুর। জানি তোর পক্ষে মেনে নেওয়া কঠিন, তবে এটাই সত্য ছোট থেকেই আমরা একে অপরকে ভীষণ ভালোবাসি। একটা অদ্ভুত বন্ডিং ছিলো আমাদের। শুনতে হয়তো আমাদের সম্পর্ক সমাজের চোখে নিষিদ্ধ, পাপ, কিন্তু রোদ্দুর আমি জোর গলায় বলতে পারি, যে অনেক সুখি বিবাহিত সম্পর্কের থেকেও আমরা দুজনে অনেক, অনেক বেশি সুখি।
মায়ের কথায় চোখ ভিজে ওঠে রোদ্দুর এর। love story
- আমি জানি মা। আমার কোনো অভিযোগ নেই তোমাদের প্রতি। আমি গর্ব অনুভব করি তোমাদের ভালোবাসার বন্ডিং দেখে।
রোদ্দুর এর কথায় পরিবেশ টা অনেক হালকা হয়ে আসে। আনন্দ অশ্রু গড়াতে থাকে তিন জনের চোখ থেকেই।
রোদ্দুর ওর বাবা মার কাছে আবারও সব কিছু শুনতে চায় কারা তাদের আজকের এই অবস্থার জন্য দায়ী। রবিউল এর ব্যাপারে সব শোনার পরে চোয়াল শক্ত হয়ে ওঠে রোদ্দুর এর। বাবা মাকে বলে আচ্ছা আমার একটা সন্দেহ হচ্ছে। তোমাদের বাড়িটা কোথায় ছিপ বলোতো??
ঠিকানা শুনে লাফিয়ে ওঠে রোদ্দুর! আচ্ছা তোমাদের বাড়ির সামনে অনেকটা জুড়ে সবুজ ঘাস, মাঝ দিয়ে নুড়ি বেছানো রাস্তা তাইনা? রাস্তার একধারে শ্বেত পাথর এর গোল টেবিল আরেক পাশে ফোয়ারা।
ছেলের মুখে নিখুঁত বর্ননা শুনে আশ্চর্য হয়ে যায় সৃজন আর সৃষ্টি। এক সাথে দুজনেই বলে তুই তুই কিভাবে জানলি?? love story
- আমার নিয়তিই আমাকে চিনিয়েছে। তোমারা দুজনেই শুনে রাখো ওই রবিউল নামক শয়তান এর পাপের ঘড়া পূর্ণ হয়েছে, আর ওকে বধ করবার জন্য গোকুলে আমিই বেড়ে উঠেছি। আমার হাতেই বিনাশ হবে ওর পাপ এর।
ছেলের কথায় ভয় পেয়ে যায় ওরা। সৃষ্টি দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরে রোদ্দুরকে। না না বাবা ওর অনেক ক্ষমতা। আমি চাই না ওসব শায় সম্পত্তি। তুই ভালো থাক বাবা।
এদিকে রবিউল হাসান জেনে গেছে যে মেঘ বস্তির একটা ছেলের সাথে ইদানীং খুব মেলামেশা করছে। খোঁজ নিয়ে জেনেছে কাওরান বাজার এর কাছে একটা বস্তিতে থাকে ছেলেটা। ছেলেটার চোখ ওর খুব পরিচিত!! আর ছেলেটা বলেছে ও নাকি ওর মায়ের চোখ পেয়েছে!! বস্তিতে লোক পাঠিয়েছে ও ছেলেটার মা বাবার খোঁজ করতে। সৃষ্টি যখন স্কুলে যাচ্ছিলো ও জানলোও না যে ওর অজান্তেই কেউ একজন স্মার্টফোনে ওর ছবি তুললো!! love story
ছবিটা যখন রবিউল এর হোয়াটসঅ্যাপ এ মেসেজ করা হলো রবিউল তখন সোফায় গা এলিয়ে দিয়ে আয়েশ করে বেনসনে টান দিচ্ছে। হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ আসার টুং শব্দ হতেই মেসেজ টা ওপেন করে ও। মেসেজ ওপেন করতেই বসা থেকে লাফিয়ে দাড়িয়ে যায় ও। সিগারেট এর ধোঁয়া ফুসফুসে আঁটকে খুকখুক করে কেশে ওঠে। দু চোখ বড় বড় করে তাকায় ফোনের স্ক্রিনের দিকে!! সৃষ্টি!!! এত্তো বছর বাদে ও খুঁজে পেয়েছে!! সার্থক হয়েছে ও।
হোয়াটসঅ্যাপে কিছু নির্দেশনা দিয়ে সিগারেটে ঘন ঘন টান দিতে দিতে ঘরময় পায়চারী শুরু করে রবিউল। উত্তেজনায় দুচোখ চকচক করছে। বিন্দু বিন্দু ঘাম জমছে কপালে। কপালের ঘাম মুছে আসন্ন উত্তেজনায় ছটফট শুরু করলো রবিউল। আর অল্পকিছুক্ষণ তারপরেই সৃষ্টিকে ভোগ করবে। পায়চারী করতে করতে দৃশ্যটা কল্পনা করে শিহরিত হয়ে ওঠে ও বারবার।
সৃষ্টি তখন সবে স্কুলে ঢুকেছে। অফিস-রুমে বসে হাজিরা খাতাটাতে সই করতেই হন্তদন্ত হয়ে ছুটে এলো এক লোক। love story
- আপনাদের মধ্যে সৃষ্টি কে??
দাড়িয়ে যায় সৃষ্টি।
- আমি, আমি সৃষ্টি কেন কি হয়েছে?
- আপনি রোদ্দুর এর মা তো??
- হ্যা।
- এক্ষুনি একবার আমার সাথে চলুন। রোদ্দুর এক্সিডেন্ট করেছে,অবস্থা সিরিয়াস।
মুহুর্তে যেন দু চোখে আধার ঘনিয়ে আসে সৃষ্টির। তাড়াতাড়ি করে উঠে বেড়িয়ে আসে লোকটার সাথে। তার পরেই মনে পরে সৃজন এর কথা।
- ওর বাবাকে একবার জানাতে হতো।
- সমস্যা নেই, আমার সাথে গাড়ি আছে, আপনি বরং উনাকেও সাথে নিন। love story
সৃষ্টি এক ছুটে বাড়ি গিয়ে সৃজনকে জানাতেই ওউ হন্তদন্ত হয়ে বেরিয়ে আসে সৃষ্টির সাথে। ছেলের কথা শুনতেই দুজনেই বেরিয়ে আসে অপরিচিত লোকটার সাথে। হাসপাতালে যাবার নাম করে ওদের দুজনকেই তুলে নেয় গাড়িতে। ছেলের চিন্তায় এতোটাই বিভোর ওরা, যে আশপাশে একটা বারো তাকায় না। গাড়িটা থামতেই দ্রুত নেমে আসে বাইরে। একি!!! কোথায় হাসপাতাল!! বিশ বছরেও বদল হয়নি একটুও! ওরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই ওদের নিয়ে আ লোকটা রিভলবার বের করে কাভার করে ওদের দুজনকে।
- কোনোরকম কোনো চালাকির চেষ্টা করবেন না। সোজা ভেতরে ঢুকুন।
রাগে চেচিয়ে ওঠে সৃষ্টি। হচ্ছেটা কি!!! আমার ছেলে কোথায়!!
- কথা কম। বাঁচাতে চাইলে যা বলছি করুন। বলেই সৃজন এর পিঠে রিভলবার দিয়ে একটা খোঁচা মারে লোকটা। পরতে পরতেও কোনরকম ভাবে ক্র্যাচ দিয়ে পতন ঠেকায় সৃজন। সৃজন এর একটা হাত ধরে সৃষ্টি। অসহায় এর মতো দুজন মিলে এগিয়ে যায় বাড়ির গেটের দিকে। ভেতরে ঢুকতেই চোখ পরে রবিউল এর ওপর। love story
- ওওয়েলকাম ওয়েলকাম। অবশেষে বিশ বছর এর আক্ষেপ ফুরোলো আমার।।
রবিউলকে দেখেই রাগে দাতে দাত পিষে কুত্তার বাচ্চা বলে গালি দেয় সৃজন।
- চোপ। আওয়াজ নীচে। আমি জোরে কথা একদম পছন্দ করিনা।
ততক্ষণে রিভলবারটা হাতবদল হয়ে চলে এসেছে রবিউল হাসান এর হাতে। লোকটা দরজা ভিড়িয়ে দিয়ে বেরিয়ে গেছে বাইরে। এদিকে আজ ভার্সিটি যায়নি মেঘ। নিচে চিল্লাচিল্লি শুনে ও রুম থেকে বেরিয়ে এসে দাঁড়ায় সিড়ির কাছে। নীচে ড্রইংরুমে চোখ পরতেই আৎকে ওঠে। রোদ্দুর এর বাবা মা!!!!! রোদ্দুর এর ফোনে অনেকবার ছবি দেখেছে ও। উনারা কেন এখানে??? আর বাবাই কেনবা পিস্তল তাক করে আছে উনাদের দিকে??? কোনো কিছু না বুঝতে পেরে তারাতাড়ি ফোন দেয় রোদ্দুরকে। love story
- হ্যালো রোদ্দুর!!!
- মেঘ!! কি হয়েছে? এমন লাগছে কেন ভয়েস??
- রোদ্দুর আমি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না!! বাবা এখানে তোমার বাবা মাকে ধরে এনেছে।
- শিট.. ড্যাম ইট আমি আসছি এখনি।
- আমিতো কিছুই বুঝতে পারছি না।
- পরে সব বুঝিয়ে বলব।শুধু জেনে রাখ আমার বাবা মায়ের এ অবস্থার জন্য তোমার বাবাই দায়ী। তোমাদের ওই বাড়ি আসলে আমার বাবা মায়ের। রাখছি এখন। আমি আসছি এখুনি।
ফোন রেখেই দ্রুত পৌঁছে যায় রোদ্দুর। দাড়োয়ান চেনা রোদ্দুরের। মেঘের সাথে কয়েকবার দেখেছে তাই বাধা দেয়না। দ্রুত দরজা ঠেলে রুমে ঢুকে পরে রোদ্দুর। রোদ্দুর ঢুকতেই রবিউল সৃজন সৃষ্টিকে বাদ দিয়ে অস্ত্র তাক করে রোদ্দুর এর দিকে। ততোক্ষণে মেঘ ও নেমে এসেছে নীচতলায়। উদ্ভ্রান্তের মতো চারদিকে তাকায় রবিউল। love story
হাতের অস্ত্র সামনে দিকে বাড়িয়ে ধরে আরেক হাত বারিয়ে হ্যাচকা টানে সৃষ্টিকে টেনে নেয় কাছে। সৃজন উঠে দাঁড়াতে নিলে অস্ত্র দেখিয়ে ধমক দিয়ে বসিয়ে দেয় রবিউল। এক হাতে জড়িয়ে নেয় সৃষ্টিকে। সৃষ্টি ছাড়া পাবার জন্য মোচড়া মুচড়ি শুরু করতেই ক্ষেপে ওঠে রবিউল। মাগি আইজ পাইছি তোরে। শালি সেদিন পালাইছিলি আমার হাত থেকে আজ দেখি বলেই টেনে বুকের আঁচলটা ফেলে দেয় টেনে। শাড়ির আঁচল ফেলে দিতেই লাল ব্লাউজ এ ঢাকা সৃষ্টির বড় বড় দুধ দুটো যেন উপচে বেরিয়ে আসতে চায়।
সেদিকে তাকিয়ে হুপ্স শব্দ করে জিভ দিয়ে একবার লালা টানে রবিউল। দু হাত মুঠ পাকিয়ে ধরে সৃজন। এরপরে রবিউল এর আরেক টানে ব্লাউজ এর তিনটার মধ্যে দুইটা বোতাম ছিড়ে যায়। বোতাম ছেড়া ব্লাউজ ঠেলে বেরিয়ে আসতে চায় যেন দুধ দুটো। ছেড়া ব্লাউজ এর ফাঁক দিয়ে বড় বড় দুধের বোটার চারপাশের গোল খয়েরী অংশটুকুর ও অনেক খানি দেখা যায়। সে অবস্থাতেই সামনে দিকে অস্ত্র বারিয়ে ধরে পেছাতে থাকে রবিউল। পেছাতে পেছাতে হঠাৎ যেন কোনো কিছুর সাথে হোচট খেয়েছে এমন ভাবে থমকে যায় রবিউল। love story
হাতের মুঠোটা শিথিল হতেই মুচড়ে ছুটে এস কোনো রকমে আচলে বুকটা ঢেকে দৌড়ে এসে সৃজন এর বুকে ঝাপিয়ে পড়ে ফুপিয়ে কেঁদে ওঠে সৃষ্টি। এদিকে সবাই তাকিয়ে দেখে রবিউল এর মুঠে আলগা হয়ে ঠক করে মেঝের ওপরে পরল রিভলবার টা। সবার সামনে পা দুটো ভাজ হয়ে আসছে রবিউল এর। কিছুক্ষণ এর মধ্যেই সবার সামনে মুখ থুবড়ে মেঝের উপর পরে যায় রবিউল। সবাই দেখতে পায় রক্তান্ত একটা বটি হাতে দাড়িয়ে আছে মারুফ মেম্বার।
রবিউল পরে যেতেই মারুফ মেম্বার ধারালো বটিটা দিয়ে উপর্যুপরি কোপাতে থাকে দেহটা। মাংসের মধ্যে কোপ পরার থ্যাপ থ্যাপ আওয়াজ ওঠে তার সাথে সাথে উষ্ণ রক্ত ছিটকে এসে ভরে যায় মারুফ মেম্বার এর মুখ। উপর্যুপরি অনেক্ক্ষণ কুপিয়ে উঠে দাঁড়ায় মারুফ মেম্বার। শীতল কণ্ঠে বলে যাইক জীবনে একটা হইলেও ভালা কাম করলাম। তারপরেই কেঁদে ওঠে হুহু করে। কুত্তার বাচ্চা আমার সংসারডা তছনছ কইরা দিছে। love story
এই কুত্তার বাচ্চার কথায় আমার ফেরেশতার মতোন ভাই এর লগে বেঈমানী করছি আমি!! আমার মাইয়াডার জীবনডা নষ্ট কইরা দিছে!! সৃজন সৃষ্টির দিকে তাকিয়ে বলে তরা হইলি আমার রক্ত! মাফ চাওনের মুখ নাই আমার আর তগো কাছে। আল্লাহর কাছে কইস আল্লাহ যেন তর এই পাপী চাচার উপযুক্ত শাস্তি দেয়।।।
পরদিন দেশের সমস্ত পত্র পত্রিকার প্রথম পাতার হেডলাইন হয়
"" পারিবারিক দন্দের জেরে খুন বিশিষ্ট শিল্পপতি রবিউল হাসান। শশুরের দায় স্বীকার। শশুর গ্রেফতার। ""
পরবর্তী তিন মাসে বস্তি ছেড়ে নিজেদের বাড়িতে এসে ওঠে সৃজন আর সৃষ্টি। পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয় মেঘ আর রোদ্দুর এর।
এদিকে কোর্টে রবিউল হত্যা সহ ভাই ভাবিকে হত্যা ও সম্পত্তি আত্মসাৎ এর কথা স্বীকার করে নেয়ায় বিজ্ঞ আদালত ফাসির রায় দেয় মারুফ মেম্বার এর। সৃজন সৃষ্টি ছেলে আর ছেলের বৌকে হানিমুনে যেতে বললে ওরা ওদেরকেও সাথে যেতে বলে। শেষমেশ চারজন মিলেই ওরা যায় আবারো সেই লাউয়াছড়াতে। ওঠে সেই নিসর্গ কটেজেই। সৃজন এর মনে হয় সব কিছু আগের মতোই আছে। love story
সেই এক রকম কটেজ গুলো, জানালায় দাড়ালে দেখা যায় ঢেউ খেলানো চা বাগান, চা বাগান এর মাঝে লাগানো ছায়াবৃক্ষগুলোতে দোল খাচ্ছে চেনা অচেনা নানা জাতের পাখি। সব কিছু সেই আগের মতোই আছে, কেবল ওদের জীবন থেকে হারিয়ে গেছে মূল্যবান বিশটা বছর!!!!
আজ রাতে ছাদের ওপরে বারবিকিউ করবে ওরা। আগের বারে যেখানে পিকনিক পার্টি বসেছিল সেখানেই বারিবিকিউ এর আগুন জ্বালে ওরা। অনেকদিন পরে গিটার হাতে নিয়েছে সৃজন। রাত বারছে, হাজার বছরের পুরোনো রাত সেই রাতের গভিরতার সাথে সাথে ঝঙ্কার তুলে সৃজন এর গিটার। আজ বাবা মাকে খুব মনে পরছে ওর। সৃজন গায়..
" ছেলে আমার বড় হবে, মাকে বলতো সে কথা,
হবে মানুষের মতো মানুষ এক,
লিখা ইতিহাসের পাতায়,
নিজ হাতে খেতে পারতামনা বাবা বলতো,
ও খোকা, যখন আমি থাকবোনা,
কি করবিরে বোকা
এ যে রক্তের সাথে রক্তের দাম, সার্থের অনেক উর্ধ্বে,
হঠাৎ অজানা ঝরে তোমায় হারালাম,
মাথায় আকাশ ভেঙে পরলো,
বাবা কতোদিন কতোদিন দেখিনা তোমায়...
সৃজন এর গানে বাবাআর কথা মনে পরে সৃষ্টির ও। নিজের অজান্তেই গাল বেয়ে গড়াতে থাকে অশ্রুধারা।
অন্যদিকে মারুফ মেম্বার এর ফাসী কার্যকর করা হবে আজ রাতেই। সে জন্য ভালো করে গোসল করানো হলো তাকে। পুলিশ এসে নিয়ে গিয়ে দাড় করিয়ে দিল ফাসীর মঞ্চে। জল্লাদ এসে জম টুপিটা পরিয়ে গলায় দড়ির ফাস পরিয়ে দিলো। জল্লাদ আস্তে আস্তে গিয়ে দাড়ালো লিভারটার কাছে। love story
লিভারটা টেনে দিলেই পায়ের নীচের পাটাতন সরে গিয়ে ঝুলে পরবে মারুফ মেম্বার এর দেহ। জল্লাদ লিভার এর হাতলটা ধরে ঠায় তাকিয়ে আছে জেলার এর হাতে ধরা সাদা রুমালটার দিকে। রুমালটা জেলার এর হাত থেকে ঝুপ করে মাটিতে পড়ামাত্র টেনে দিতে হবে লিভারটা।৷
-------সমাপ্ত------
পারিশিষ্ট : লিখাটা যারা প্রথম থেকে শেষ অবধি পড়েছেন তাদেরকে অনেক ধন্যবাদ। আর হ্যা যারা লিখাটা পড়েছেন লেখক হিসেবে তাদের সবার কাছেই মন্তব্য আশা করছি। আপনাদের মন্তব্যগুলোই আমার লিখার মুল প্রেরণা।
আগামীতে হয়তোবা আবারও দেখা হবে নতুন কোনো গল্প নিয়ে।
ততোদিন পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ্য থাকুন, নিরাপদে থাকুন। ভালোবাসা অবিরাম।
ঠিক যেন লাভস্টোরী টু - 9
Related posts: