paribariki panu ঠিক যেন লাভস্টোরী - 18 - Malayalam sex stories

paribariki panu ঠিক যেন লাভস্টোরী - 18

sexstories

Administrator
Staff member
bangla paribariki panu choti. আস্তে আস্তে দিন যতই গড়াতে থাকে সৃষ্টির ভেতরে থাকা সত্তাটি তার অস্তিত্ব জানান দিতে চায় তীব্রভাবে। তলপেটটা দিনকে দিন স্ফীত হয়ে উঠতে থাকে ওর। রোজ রাতে সৃষ্টি যখন শুয়ে থাকে সৃজন পাশে বসে কান লাগিয়ে দেয় ওর তলপেটে। বোনের স্ফীত তলপেটে কান লাগিয়ে শুনতে চেষ্টা করে প্রানের স্পন্দন। সৃষ্টি হাত বুলিয়ে দেয় ভাই এর মাথায়। মঝে মাঝেই যখন বাচ্চা বেবি কিক করে, সৃষ্টির তলপেটের পেটের পেশি কেমন কেঁপে কেঁপে ওঠে।

সৃষ্টি তখন সৃজন এর মাথার চুলগুলো মুঠো করে ধরে বলে ইসসসসসস দেখ কেমন লাথি মারছে এখনি, ঠিক তোর মতো দুষ্টু হবে দেখিস। সৃজন হেসে বলে না না দেখিস একদম মায়ের মতো মিষ্টি হবে। দুই ভাইবোন মিলে কল্পনার জাল বুনে চলে ওদের অনাগত সন্তানকে নিয়ে। কল্পনার জাল বুনতে বুনতে একটা সময় ঘুমিয়ে যায় সৃষ্টি। সৃজন আরো কিছুক্ষণ কান লাগিয়ে বসে থাকে বোনের তলপেটে। একটু একটু করে হাত বোলায়। এখানেই আছে ওদের ভালোবাসার ফসল।

paribariki panu

কিন্তু জীবন যে থেমে থাকে না, জীবন চলতে থাকে জীবনের মতোন। তাইতো এই ছয় মাস এর গর্ভবতী হয়েও রোজ সকালে উঠেই জীবিকার তাগিদে ছুটতেই হয় সৃষ্টিকে। ভালোভাবে শাড়ি তলপেটে জড়িয়ে শরীর ঢেকে ঢুকে স্কুলে যায় সৃষ্টি। ওর চাকরিটা যদি না থাকে তবে বাচ্চাটাকে বাঁচাবে কিভাবে আর অসুস্থ ভাইটাকেই বা খাওয়াবে কি???

এদিকে মনিও গর্ভবতী। যদিও মনি নিজেও ঠিক করে জানেনা গর্ভের এই সন্তান এর বাবাটা আসলে কে? ওর স্বামী রবিউল! নাকি ওর বাবা মারুফ মেম্বার?? কিন্তু মনির যত্নের কোনো অভাব নেই। এক সময়ে যেই ঘরটা ছিল সৃষ্টির আজকে সেটা মনির। সার্বক্ষণিক নার্স নিয়োজিত আছে দেখাশোনার জন্য। বেড সাইড টেবিলটায় আপেল, কমলা, মাল্টা, আঙুর, আনার, হরলিক্স সব থরে থরে সাজানো। বাচ্চা আর মায়ের যাতে কোনো ক্ষতি না হয়। ভাগ্যের পরহাসে কার কোথায় থাকার কথা! আর আজ কে কোথায়!! paribariki panu

সকলাবেলা ঘুম থেকে উঠে রান্না সেরে রেডি হয়ে স্কুলে যায় সৃষ্টি। আজ স্কুলে যেতেই হেড মিস্ট্রেস সৃষ্টিকে ডেকে পাঠায় তার রুমে।
- স্লামালেকুম ম্যাম, আসবো??
- ওয়ালাইকুম সালাম আরে সৃষ্টি এসো এসো। আসার জন্যই তো ডাকলাম। বসো।
হেড মিস্ট্রেস এর সামনে রাখা ডেস্কটার অপর পাশের চেয়ারটাতে মুখোমুখি বসে পরে সৃষ্টি।
- ম্যাম কিছু বলবেন?

- ও হ্যা যেটা বলছিলাম এ অবস্থায় তোমার তো এখন একটু রেস্ট দরকার। সাবধানে চলা উচিৎ। যখন তখন যেকোনো একটা অঘটন ঘটে যেতে পারে। তারচেয়ে বরং কালকে থেকে তোমাকে আর স্কুলে আসতে হবে না।
হেড মিস্ট্রেস এর কথা শুনেই মুখ শুকিয়ে যায় সৃষ্টির। আসতে হবেনা মানে চাকরি নেই!! তাহলে চলবে কিভাবে? তাড়াতাড়ি করে বলে ওঠে. paribariki panu

- না ম্যাম কোনো সমস্যা হচ্ছে না আমার, কাছেই তো। আসতে যেতে সমস্যা নেই।
- তার পরেও বিপদ তো আর বলে আসেনা। ডেস্কের ওপরে দুহাত তুলে দিয়ে হেড মিস্ট্রেস এর হাতটা আকড়ে ধরে সৃষ্টি। ছলছল চোখে তাকিয়ে বলে
- দেখুন ম্যাম চাকরিটা আমার খুব দরকার। প্লিজ ম্যাম ওর অবস্থা তো আপনি জানেন। চাকরি টা না থাকলে আমি অনেক প্রবলেমে পরবো।

- ওমা দেখো দেখি মেয়ের কান্ড! চাকরি থাকবে না কি! আমিতো তোমাকে ছুটি কাটাতে বলেছি। মাস গেলে তোমার মাইনে ঠিক পৌঁছে যাবে। পাঁচ মাস পরেও আবার কাজে যোগ দিবে তুমি।
ঘটনার আকস্মিকতায় যেন বোবা হয়ে যায় সৃষ্টি। টপটপ করে জল গড়াতে থাকে ওর ডাগর ডাগর দুই চোখ থেকে। সৃষ্টিকে কাঁদতে দেখে নিজের চেয়ার থেকে উঠে আসে হেড মিস্ট্রেস। সৃষ্টির দুই কাধে দুহাত রেখে দাড়া করিয়ে দেয়। paribariki panu

- দেখো দেখি মেয়ের কান্ড! এ সময়ে কি কাঁদতে আছে? বাচ্চার অকল্যাণ হয় যে। বলে সৃষ্টিকে জড়িয়ে নেয় বুকে। হেড মিস্ট্রেসকে জড়িয়ে ধরে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে থাকে। সৃষ্টির পিঠের ওপর হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলে দেখো দেখি, এই পাগলী এ সময় কাঁদতে হয়না। তুমি তো আমার মেয়েরই মতো। হঠাৎ মায়ের কথা মনে পরতে আরো বেশি কান্না পায় সৃষ্টির।

বাসায় এসে সৃজনকে সব জানায় সৃষ্টি। সৃজন ও বলে যে হ্যা ঠিকি আছে, এখন তোর রেস্ট দরকার। আর হ্যা রান্না বান্নার কাজ এখন আমি করব। এই শরীর নিয়ে তোর আগুন এর কাছে যেয়ে কাজ নেই।
- ইসসসস উনি নাকি রান্না করবে, তাহলে আর খেতে হবে না।
- না হলো যা রাধব তাই ই খাবি। নাছোড়বান্দা সৃজন। paribariki panu

বগলে ক্র্যাচ লাগিয়ে পা টেনে টেনে হাড়ি পাতিল চাল ডাল মসলা সব নিয়ে যায় উনুন এর কাছে। শুরু করে দেয় রান্নার কাজ। ভাত বসানোর জন্য আগুন জালাতে নিয়েই পুরো উঠোনটা ধোয়ায় ভরিয়ে তোলে সৃজন। এদিকে সৃষ্টি বারান্দায় বসে ভাই এর কাজ দেখতে দেখতে হেসে কুটিকুটি হয়। সৃজন চোখ কটমট করে তাকায় সৃষ্টির দিকে। খবরদার বলছি হাসবি না একদম।

ভাই এর রাগ দেখে যেন আরো বেশি করে হাসি পায় সৃষ্টির। কিন্তু সৃজন রেগে যাবে দেখেই জোরে না হেসে ঠোঁট টিপে টিপে হাসতে থাকে । সৃজন ভাত চুলোয় দিয়ে বসে যায় তরকারি কাটতে। এসব কাজ আগে কখনো করেন ও। হঠাৎ অসাবধানতায় আঙুল এর একটুখানি কেটে যেতেই উফফগ করে হাত ঝাড়া শুরু করে ও। এদিকে সৃষ্টি আৎকে ওঠে। কি হয়েছে ভাই? paribariki panu

বলেই বারান্দা থেকে তড়িঘড়ি করে উঠে দৌড়ে আসতে নেয় সৃজন এর দিকে। সৃজন ও ভয় পেয়ে তাড়াতাড়ি করে ক্র্যাচ নিয়ে উঠেই ধরে ফেলে সৃষ্টিকে।
- তুই কি পাগল আপু??? এই শরীরে ওভাবে দৌড় দেয় কেউ? একটা কিছু যদি হয়ে যেত?

সৃজন এর কথায় মুখ কাচুমাচু করে ফেলে সৃষ্টি। সারামুখে কেমন যেন একটা অপরাধী অপরাধী ভাব ওর মুখ এর এই ভাবটার সাথে সৃজন আগে থেকেই পরিচিত। ছোট থেকেই ভুলভাল কোনো কাজ করলেই ওর মুখের ভাবটা এমন হয়ে যেত।

ওকে এই অবস্থায় আরো অনেক বেশি মায়াবী দেখায়। সৃজন এর চোখে তাকিয়ে বলে স্যরি ভাই, তোর হাত কেটে গেছে দেখেই অন্য কোনো হুশ ছিলনা আমার।
আস্ত একটা পাগলী তুই।
- হলাম না হয় পাগলী। paribariki panu

হেসে বোনের চুলে হাত বুলিয়ে ওকে ধরে ধরে বারান্দায় নিয়ে গিয়ে বসিয়ে দেয় সৃজন।
এদিকে যে চুলোয় ভাত পুড়ে গন্ধ ছড়াচ্ছে সেদিকে খেয়াল নেই কারো। গন্ধ নাকে যেতেই ঘুরে উনুনের কাছে চলে যায় সৃজন। তাড়াতাড়ি করে ভাতটা নামিয়ে নেয়। ভাত পোড়ার গন্ধ পেয়ে কিগো মাষ্টারনী তুমার ভাত তো ছাই হইয়া গেল বলতে বলতে সৃজন দের উঠোনে আসে পাশের বাড়ির মহিলা। এসে সৃজনকে রাধতে দেখে অবাক হয়ে যায়।

- ওমা ওমা ওমা এইডা কি দেকতাছি গো আমি মাষ্টারনী!!
সৃষ্টিও হেসে জবাব দেয় আমার বাবুর্চি নাকি আমাকে আর এই শরীরে আগুনের কাছে যেতে দেবেনা। এখন থেকে নিজেই রাধবে।
- আহারে তুমার স্বোয়ামী ডা কত্তো ভালা। আর আমারডা মাইনষের বাচ্চাই না। বলতে বলতে উদাস হয়ে যায় মহিলা।
- কেন ভাবি? কি হয়েছে? paribariki panu

- দুঃখের কতা কি আর কই গো মাষ্টারনী এই দেহ বলে পিছন দিক ঘুরে শাড়ি সরিয়ে পীঠের কালসিটে পরা জখম এর দাগগুলো দেখাতে থাকে। কাঁদতে কাঁদতে বলে কাইল রাইতে নেশা করা ট্যাকা দেই নাই দেইখা দেহ কি করছে মাইরা!!
পিঠের ওপরে কালসিটে পরা নীলচে জখম এর দাগগুলো দেখে শিউরে ওঠে সৃষ্টি। কাঁদতে কাঁদতে নিজের বাড়িতে ফিরে যায়। সৃজন ও রান্না শেষ করে ফেলেছে। রান্না শেষ করে একটা প্লেট এ ভাত তরকারি বেরে নিয়ে এগিয়ে যায় সৃষ্টির দিকে।

ভাত পোড়ার কারনে ভাত গুলো কেমন লালচে দেখাচ্ছে। প্লেটে ভাত মাখিয়ে সৃষ্টির পাশে বসে নিজের হাতে তুলে দেয় বোন এর মুখে। হা করে সৃজন এর হাত থেকে খাবার নেয় সৃষ্টি। সৃষ্টির মুখে ভাত দিয়ে সৃজন বলে ভালো হয়নি না??
- কে বলেছে ভালো হয়নি? অনেক মজা হয়েছে।
সৃজন নিজেও একবার মুখে দেয়। মুখে দিয়েই বিকৃত করে ফেলে মুখ ইসসস এ যে লবনে একেবারে তেতো হয়ে গেছে। paribariki panu

সৃষ্টি মিষ্টি হেসে বলে আমার তো ভালোই লাগছে। আবার হা করে ও। সৃজন ভাত তুলে দেয় ওর মুখে।
পোড়া ভাত, লবনে একেবারে তেতো তরকারি, তারপরও সৃষ্টির মনে হয় এ যেন অমৃত। এতো তৃপ্তি ও কোনোদিন খেয়েই পায়নি। ওর কাছে মনে হয়না যে ওর ভাই ওর মুখে খাবার তুলে দিচ্ছে, ওর কাছেতো এটা মুঠো ভরা ভালোবাসা।

সময় তো কখনো থেমে থাকেনা, সময় বয়ে চলে তার আপন গতিতে। একটু একটু করে মিনিট পেরাতে পেরোতে রুপ নেয় ঘন্টায়, আবার চব্বিশ এর ঘর পেরোতেই সেই ঘন্টাই হয়ে যায় দিন, আবার সাত দিনের যোগফল সপ্তাহ , চার সপ্তাহ পেরোলেই সেটা মাস। সময়ের সাথে সাথে তো কতোকিছুর পরিবর্তন ঘটে,অথচ কোনো পরিবর্তন নেই এই ঘিঞ্জি বস্তিটায়। সেই একঘেয়ে জীবন। সকালে যেগে ওঠা বস্তিতে কলরব, চিৎকার চেচামেচি খিস্তি ঝগড়া আবার রাত নামতেই যেন কবরের নিস্তব্ধতা। paribariki panu

মানুষগুলোও খুব অদ্ভুত এই দেখা যায় কোমোর বেধে ঝগড়া করছে, নোংরা খিস্তি ঝাড়ছে একে অপরকে তো পরক্ষণেই আবার একসাথে বসে হাসিমুখে তাস পেটাচ্ছে! এতোদিন হলো এই বস্তিতে আছে, তবুও যেন কতো দূরের বাসিন্দা সৃজন আর সৃষ্টি।
এই ঘিঞ্জি বস্তিটার মতোই পরিবর্তনহীন ওদের জীবনটাও, কেবল সময় এর সাথে সাথে শুধু বাড়ছে সৃষ্টির তলপেটের আয়তন আর আরো শুকিয়ে আসছে সৃজন এর অকেজো পা টা।

বস্তির খাখা রোদে পুড়ে কিছুটা ফিকে হয়ে এসেছে দুই ভাইবোন এর ই গায়ের রঙ। সৃষ্টির চুলগুলোও আর আগের মতো ঘন কালো আর উজ্জ্বল নেই, দিন দিন পাতলা হয়ে আসছে আর কেমন কালো ছেড়ে মরচে ধরা লালচে ছোপ লেগেছে চুলে।
পায়ে পায়ে এগিয়ে আসে সৃষ্টির প্রসব এর দিন। মাঝে মাঝেই হালকা ব্যাথা হয় পেটে। পাশের বাড়ির ভাবি বলে রেখেছে ব্যাথা উঠলেই যেন তাকে ডাক দেয়। সেদিন দুপুরে হঠাৎ তীব্র ব্যাথা ওঠে সৃষ্টির পেটে।

সৃষ্টি বুঝতে পারে এ ব্যাথা অন্য দিনের থেকে আলাদা। ব্যাথায় মুখ কুচকে ওঠে ওর। ভয় পেয়ে যায় সৃজন। তারাতাড়ি করে গিয়ে ডেকে নিয়ে আসে পাশের বাড়ির ভাবিকে। সৃজন ডাকতেই আরো দুই তিনজন মহিলাকে সাথে করে নিয়ে চলে আসে উনি। সৃজন ঘরে ঢুকে দেখে ব্যাথায় বারবার বিছানার চাদর খামচে খামচে ধরছে সৃষ্টি। তীব্র ব্যাথা থামাতে দাঁত দিয়ে কামড়ে কামড়ে ধরছে ঠোঁট এর কোনা। বিন্দু বিন্দু ঘাম এসে জড়ো হয়েছে ওর মায়াবী মুখটাতে। paribariki panu

সৃজনকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে চেচিয়ে ওঠে পাশের বাড়ির ভাবি। পুলা মাইনষের এইহানে কি কাম? যাও বাইরে যাও। লজ্জা পেয়ে তাড়াতাড়ি করে বাইরে চলে আসে সৃজন। কি এক উৎকন্ঠা ঘিরে ধরে ওকে।

এদিকে প্রসব বেদনা উঠেছে মনিরো। সৃষ্টি যখন তীব্র ব্যাথায় হাত পা ছুড়ছে বস্তির ছোট্ট ঘরটার মাচান এর বিছানায়, মনি তখন দেশের সেরা প্রাইভেট ক্লিনিক এর কেবিনে ধপধপে সাদা চাদরের বিছানায় নার্স আর ডাক্তার এ পরিবেষ্টিত হয়ে আছে। একি সাথে পৃথিবীতে আসছে দুটো প্রাণ, অথচ কতো তফাৎ দুই এত ভেতর।

সৃজন বগলে ক্র্যাচ নিয়ে পা টেনে টেনে পায়চারি করে চলেছে ছোট্ট উঠোনের মধ্যে। কান খাড়া করে রেখেছে ভেতর থেকে কিছু শুনবার আশায়। এসব ঘিঞ্জি বস্তিতে কোনো সংবাদ ই চাপা থাকে না। এ সংবাদ ও তাই ছড়িয়ে পরেছে। ছোট্ট উঠোনটায় একে একে জড়ো হচ্ছে অনেক মানুষ। হঠাৎ সৃজন এর কানে আসে আহহহহহহহহহহহহহজ করে সৃষ্টির সুতীব্র আর্তচিৎকার। পরক্ষণেই কুয়ায়া কুয়ায়ায়া শব্দে একটা নতুন প্রান চারদিকে ঘোষণা করে তার আগমনী বার্তা। paribariki panu

একটা মহিলা ঘর থেকে শুধু একবার দরজাটা ফাঁক করে বলে ওই মিয়া পুলা হইছে পুলা। হৈ হৈ করে ওঠে উঠোনে জড়ো হওয়া মানুষ গুলী। কি মিয়া মিষ্টি খাওয়াইয়ো কইলাম। পয়লা বারেই পুলা হইছে! আস্তে আস্তে ভিড় কমে আসে উঠোন এর। উৎকন্ঠা কমেনা সৃজন এর। সৃষ্টি ঠিক আছেতো? কিছুক্ষণ পরে দরজা খুলে দেয় মহিলারা। সৃজন এগিয়ে যেতেই বলে পুলার মুখ দেখবা না?

সৃজন উৎকন্ঠা নিয়ে বলে ও কেমন আছে? ও ভালো আছেতো?
পাশের বাসার ভাবিটা ঘার ঘুরিয়ে সৃষ্টিকে বলে দ্যাকছনী মাষ্টারনী কারবারডা! পুলা হইছে সেইদিকে খিয়াল নাই তুমারে নিয়াই চিন্তা! সৃজন ঘরে যেতেই একে একে বেরিয়ে যায় সব মহিলারা। পাশের বাসার ভাবি বলে যায় একটু পরে আবার আসমু আমি। অহন বউ এর পাশে বস যাও। সৃজন ঘরে ঢুকেই দেখে শুয়ে আছে সৃষ্টি। পাশেই ন্যাকড়ার পুটলিতে মোড়া ছোট্ট এক শিশু। paribariki panu

এটা ওদের ভালোবাসার ফসল। সৃজন ঘরে ঢুকতেই সৃজন এর দিকে চেয়ে মিষ্টি করে হাসে সৃষ্টি। আজ যেন আরো বেশি সুন্দর লাগছে সৃষ্টিকে। ওনেক বেশি কমনীয় হয়ে উঠেছে মুখটা। এটাই কি মাতৃত্বের সৌন্দর্য??
জানা নেই সৃজন এর। ঠক ঠক শব্দে ক্রাচ হাতে এগিয়ে গিয়ে বসে পরে সৃষ্টির পাশে। ঝুকে এসে আলতো করে চুমু খায় সৃষ্টির কপালে। দুহাত বাড়িয়ে কোলে তুলে নেয় ঘুমন্ত বাচ্চাটাকে।

কাদামাটির তাল এর মতো নরম শরীরটাকে বুকে জড়িয়ে নিতেই যেন এতো দিনকার আটকে রাখা কান্না ছিটকে আসে সৃজন এর বুক চিরে। কাঁদতে কাঁদতে বলে ওঠে আমার সন্তান তুই। আমার ছেলে। তোকে আমি মানুষ এর মতো মানুষ করবো। তোর এই ল্যাংড়া অক্ষম বাপটা নিজের যে যে স্বপ্ন পুরন করতে পারেনি সেই স্বপ্ন আজ থেকে আমি নতুনভাবে দেখব তোর চোখে। তোর নাম আমি রাখলাম রোদ্দুর। paribariki panu

রাতের শেষে সোনালী রোদ্দুর এসে যেমন দূর করে রাতের কালো আধার তেমন আমাদের জীবনের আধার ঘুঁচিয়ে আলো বয়ে আনবি তুই। বলে রোদ্দুরকে আকড়ে ধরে নিজের বুকে। সৃজন এর দুচোখ থেকে টপ টপ করে অশ্রুর ফোঁটা গড়িয়ে পরতে থাকে ছেলের গায়ের ওপর। সৃজন এর সাথে সাথে অশ্রুধারা গড়াচ্ছে সৃষ্টির চোখ থেকেও। আর সদ্যোজাত শিশুটি যেন পরম নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে আছে বাবার কোলে।

-------(সমাপ্ত)--------
পারিশিষ্ট : আমার এই গল্পটা যারা একেবারে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়েছেন তাদের সবার কাছে মন্তব্য আশা করছি। গল্পের ব্যাপারে আপনাদের সমালোচনা এবং প্রশংসা এই দুই ই আমার লিখবার প্রেরণা।
সকলে ভালো থাকুন, সুস্থ্য থাকুন, নিরাপদ থাকুন।
ভালোবাসা অবিরাম।

ঠিক যেন লাভস্টোরী - 17

Related posts:
 
Back
Top